বিল্লাল সালমান, বাহারাইন

গল্পটা আমাদের। সবার মত এই দিনগুলোতে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে, নিজেদের পরিবারের কথা ভেবে আমাদেরও ঘরে থাকার কথা ছিল। তবে দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ, ভালোবাসা আমাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। দেশ থেকে অনেক দূরে, বাহরাইনে যখন করোনার প্রকোপে মানুষের জীবনযাত্রা নাকাল হতে শুরু করেছিল তখন আমরা কি করে ঘরে বসে থাকি? উপহার নিয়ে পৌঁছে গেছি মানুষের দ্বারে, দ্বারে। একে একে ১৭০০ পরিবারের কাছে পৌছে গেছে আমাদের উপহার, সঙ্গে ১৪০ জন অসহায় ব্যক্তিকে আমাদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে নগদ অর্থ প্রদান।

ভোর থেকে সন্ধ্যা, শরীরে ক্লান্তি এসেছে, মনে হয়েছে, অনেক তো হলো এবার নাহয় থাক। তবে যে যুদ্ধে আমরা আছি সেখান থেকে পিছপা হতে আমাদের বিবেক সায় দেয়নি।

মাঝে রমজান এলো, আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেলো বহুগুণ। ত্যাগের মহিমায় দীপ্ত হয়ে পুরো মাসজুড়ে দৈনিক হাজারের বেশী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ইফতার, এছাড়া দৈনন্দিন সব প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকাসহ সবরকম সেবামূলক কাজ আমরা করেছি নিজেদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে।

মাইক হাতে ঘুরে ঘুরে সর্তকীকরণ ফেরি করে বেরিয়েছি, অনলাইন ক্যম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে সর্তক করার চেষ্টা করেছি। অনলাইন ক্লাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সহযোগিতায় আনুমানিক ৩০০০০ বাহরাইন দিনার প্রকল্প পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছি।

এতকিছুর পরেও সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে আপনাদের মুখে এক চিলতে হাসি দেখার পর। এবারের ঈদটা একটু ভিন্ন তবে আপনাদের মুখের বিশুদ্ধ হাসিতেই পুরো সময়টা জুড়ে আমরা ঈদের আনন্দ খুঁজে পেয়েছি। বাহরাইন কালচারাল এন্ড সোশ্যাল সোসাইটির পাশে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আরও অনেকটা পথ পাড়ি দেয়া বাকি।