জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। তার খণ্ডিত দেহের পাশে একটি বৈদ্যুতিক করাত পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি দিয়েই ফাহিমের মাথা, দুই হাত, দুই পা কেটে শরীর থেকে আলাদা করা হয়। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের নিজস্ব অ্যাপার্টমন্ট থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।নিউইয়র্ক পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯১১ নম্বরের এক টেলিফোন কলের মাধ্যমে পুলিশ প্রথম এই খুনের কথা জানতে পারে। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) প্রিসিঙ্ক্ট ০০৭ (পুলিশ স্টেশন বা থানা) থেকে পুলিশ সদস্যরা ২৬৫ ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিটে (সাফোক স্ট্রিটের কর্ণারে) ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
অত্যাধুনিক ওই কন্ডোমেনিয়াম ভবনের সপ্তম তলায় ফাহিমের এপার্টমেন্ট।নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র সার্জেন্ট কার্লোস নিভেস বলেন, আমরা একটি খণ্ডিত লাশ পেয়েছি। মাথা, দুই হাত, দুই পা- সব শরীর থেকে আলাদা করা ছিল। তবে সবকিছুই ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের কোনো মোটিভ আমাদের কাছে নেই।প্রাথমিকভাবে ওই কন্ডোমেনিয়াম ভবনের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ফাহিম গত সোমবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের সময় সর্বশেষ তার এপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। এ সময় সপ্তম তলায় যাওয়ার জন্য তিনি যখন নিচতলা থেকে এলিভেটর বা লিফটে চড়েন তখন আরো এক ব্যক্তি লিফটে উঠেন। ফাহিম সন্দেহের দৃষ্টিতে অচেনা ওই লোকটির দিকে তাকিয়েছেন বলেও ভিডিওতে দেখা গেছে। এরপর সে ফাহিমের সঙ্গেই সপ্তম তলায় নেমে পড়েন এবং ফাহিম তার এপার্টমেন্টের দরজা খোলা মাত্রই লোকটি তার ওপর আক্রমণ চালায় এবং ধাক্কা দিয়ে তাকে এপার্টমেন্টের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে।পুলিশ বলছে, প্রথমিকভাবে সবকিছু দেখেশুনে মনে হচ্ছে, হত্যকারী একজন পেশাদার খুনি। ফাহিমের মৃতদেহটি ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হলেও মেঝেতে কোনো রক্তের দাগ ছিল না।নিউইয়র্ক পুলিশ জানায়, যে অ্যাপার্টমেন্টে মরদেহ পাওয়া গেছে তা গত বছর সাড়ে ২২ লাখ ডলারে কিনেছিলেন ফাহিম।উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে জন্ম ফাহিমের। তার বাবা সালেহ উদ্দিন বড় হয়েছেন চট্টগ্রামে আর মা নোয়াখালীর মানুষ।
ফাহিম পড়াশোনা করেছেন ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে আমেরিকার বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে। থাকতেন নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে। ফাহিম নাইজেরিয়া আর কলম্বিয়ায়ও এমন আরো দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানির মালিক।