শ্রীলঙ্কার সব মুসলিম মন্ত্রীর ইস্তফা
শ্রীলঙ্কার সব মুসলিম মন্ত্রীর ইস্তফা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯ মন্ত্রীর সবাই সোমবার ইস্তফা দিয়েছেন। একইসঙ্গে দুই মুসলিম গভর্নরও পদত্যাগ করেছেন। ইস্টার সানডের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর উগ্র বৌদ্ধদের দাবির মুখে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। গত এপ্রিলে ওই হামলায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিল।

এর আগে শুক্রবার সন্ন্যাসী-রাজনীতিবিদ আথুরুলিয়া রথানা থেরো (তিনি সিনহলি জাতীয়তাবাদী জাথিকা হেলা উরুমায়া- জেএইচইউ-এর হয়ে পার্লামেন্টে এমপি) ক্যান্ডিতে ‘আমৃত্যু অনশন’ শুরু করেছিলেন। তিনি তিন শীর্ষ মুসলিম রাজনীতিবিদকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি করছেন। এরা হলেন মন্ত্রিসভার সদস্য রশিদ বাথিউদ্দিন, ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর আজাদ স্যালি ও ইস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর এমএলএএম হিসবুল্লাহ।

থেরো দাবি করছেন, এই তিন মুসলিম রাজনীতিবিদ কোনো না কোনোভাবে শ্রীলংকার মুসলিমদের মধ্যে ওয়াহাবিবাদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, ২১ এপ্রিল ২৫০ জনের বেশি লোককে হত্যাকারী আত্মঘাতী বোমারুদের নেতা জাহরান কাসিমের সাথে তাদের সম্পর্ক রয়েছে।

দাবি আদায়ে চাপ দিতে রাথানা থেরো শ্রীলংকার বৌদ্ধদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান ক্যান্ডির টুথ মন্দিরের বাইরে অনশন শুরু করেছেন। অনেক সন্ন্যাসী ও অজ্ঞ লোক এই অনশনে যোগ দিয়ে দেশে জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা বাড়িয়ে তুলেছেন। থেরো বলেছেন, ওই মুসলিম মন্ত্রী ও দুই গভর্নরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে।

মন্ত্রী রশিদের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে একটি অনাস্থা প্রস্তাব রয়েছে। এ নিয়ে ১৮ ও ১৯ জুন আলোচনা হবে। শ্রীলংকায় বিদেশী ইসলামি মৌলবাদীদের প্রচার কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া মিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী এম ওয়াই ইব্রাহিমের সাথে তার সম্পর্ক থাকার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। ইব্রাহিমের দুই ছেলে ৯ সদস্যের আত্মঘাতী হামলাকারী দলে ছিল। ইস্টার হামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে আটক একজনকে মুক্তির জন্য সেনা কমান্ডারকে অনুরোধ করেছিলেন বলেও রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

ইস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর হিসবুল্লাহ সৌদি আরবের তহবিলে ‘শরিয়াহ বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার জন্য মারাত্মক চাপে ছিলেন। আর ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের গভর্নর আজাদ স্যালির সাথে ইস্টার বিস্ফোরণে সংশ্লিষ্ট ন্যাশনাল তাওহিদ জামাতের সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য তিনি প্রকাশ্যেই গনাসারা থেরোর মুক্তির পক্ষে উকালতি করেছিলেন, কারাগারে তার সাথে সাক্ষাত পর্যন্ত করেছিলেন।