পারস্য উপসাগরের জলসীমায় নিজেদের জাহাজ চলাচলে হুমকির মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। তাই ওই অঞ্চলে থাকা জাহাজগুলোকে সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারস্য উপসাগরে এ মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের একটিমাত্র যুদ্ধজাহাজ থাকলেও যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভি।
এদিকে, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে সৃষ্ট উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে তেহরান ও লন্ডনকে সংযম প্রদর্শন করে আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক বিবৃতিতে জানান, পারস্য উপসাগরের চলমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া।
দিমিত্রি পেসকভ এমন সময়ে এ আহ্বান জানালেন, যখন যুক্তরাজ্য দুদিন ধরে দাবি করছে, জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের তেলবাহী ট্যাঙ্কার আটকের পাল্টা জবাব হিসেবে হরমুজ প্রণালি থেকে ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাঙ্কার আটক করতে চায় ইরান।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার হরমুজ প্রণালিতে একটি ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাঙ্কারের যাত্রাপথ অবরোধ করে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির তিনটি গানবোট। এরপর পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকি ও বাদানুবাদের পর ব্রিটিশ ট্যাঙ্কারের পথ ছেড়ে চলে যায় গানবোটগুলো। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে ব্রিটিশ তেলবাহী জাহাজের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো প্রচার করছে, হরমুজ প্রণালি দিয়ে ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাঙ্কারের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পারস্য উপসাগরে একটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে লন্ডন।
তবে ইরান গানবোট পাঠিয়ে যুক্তরাজ্যের তেলবাহী ট্যাঙ্কার আটকের চেষ্টা করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে আইআরজিসি। ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর গণসংযোগ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পারস্য উপসাগরে আইআরজিসির গানবোটগুলোর নিয়মিত টহল অব্যাহত থাকলেও কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্য বা অন্য কোনো দেশের তেলবাহী জাহাজ বা অন্য কোনো নৌযানের সঙ্গে তাদের কোনো ঝামেলা হয়নি।
গত ৪ জুলাই জিব্রাল্টার প্রণালি থেকে একটি ইরানি তেলবাহী জাহাজ আটক করে যুক্তরাজ্য। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ওই ট্যাঙ্কার ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় তেলবাহী জাহাজসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক জাহাজের অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব দেশের এগিয়ে আসা উচিত। এ ছাড়া ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।