সোহেল রানা মালয়েশিয়া প্রতিনিধি।
মালয়েশিয়া পুলিশ এর উপপ্রধান আইজিপি দাতুশ্রী আচ্রিল সানি বিন হাজী আবদুল্লাহ সানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম। ১৫ সেপ্টম্বর রয়েল মালয়েশিয়া পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিস্ট বিষয়ে আলোচনা হয় বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতির কারণে ছুটিতে দেশে থাকা বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ায় ফিরে আসা এবং অবৈধদের বৈধতা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মালয়েশিয়া সরকারের সফলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, মালয়েশিয়ান পুলিশ এই মহামারীর সময়ে বিদেশী নাগরিক বিশেষ করে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিকট হাইকমিশনের সেবা পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছে এবং লকডাউন করা ভবনের বাংলাদেশী নাগরিকদের সেবা প্রদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যা বাংলাদেশেও প্রশংসিত হয়েছে। ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি সাহসের সাথে মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে বলেন, এমন মহামারীর সময়েও ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয়, খাবার, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে বিশ্বে অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন।
পুলিশ উপপ্রধান বলেন অধিকাংশই বাংলাদেশী কর্মী ভালো, কাজে অনেক দক্ষ, সৎ এবং আন্তরিক। তবে ক্ষুদ্র অংশ অপরাধের সাথে জড়িত বিশেষ করে প্রতারণা, সন্ত্রাসী, কিডনাপিং, চাঁদাবাজি, জাল কাগজ তৈরি, হিউম্যান ট্রাফিকিং এবং অনলাইনে ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রোপাগান্ডা বা অপপ্রচার করে থাকে। এসব অপরাধ উভয় দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় মোকাবেলা করা হয়। হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা তাদের কর্মস্থলে আসা যাওয়ার সময় কোন প্রকার হয়রানি বা গ্রেফতার না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলিশ নিরাপত্তার জন্য আইন অনুযায়ী নিয়মিত চেক করে তখন পাসপোর্ট এবং প্রাসঙ্গিক কাগজ পত্রাদি সাথে রাখার পরামর্শ দেন। যেন পুলিশ সঠিক তথ্য পেতে পারে । হাইকমিশনার ডিটেনশন সেন্টারে থাকা কর্মীদের দ্রুত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মুক্তির ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ডেপুটি আইজিপি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন।
হাইকমিশনার বলেন, বর্তমানে মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে দেশে গিয়ে অনেক কর্মী মালয়েশিয়ায় আসার জন্য অপেক্ষা করছেন, তারা যেন আবার কাজে যোগ দিতে পারে সে বিষয়ে এবং ডিটেনশন সেন্টারসহ অন্যান্য যারা অবৈধ আছেন তাদের বৈধতা প্রদানে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন আইজিপি।
দু’দেশের পুলিশের প্রশিক্ষণ, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস নির্মূলে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে উভয়েই আশাপ্রকাশ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডিফেন্স এডভাইজার কমোডর মুশতাক আহমেদ, কাউন্সেলর (শ্রম) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, কাউন্সেলর ( শ্রম ২) মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল এবং মালয়েশিয়ান রাজকীয় পুলিশ এর ইন্টারনাল সিকিউরিটি ও পাবলিক অর্ডার ডিপার্টমেন্ট এর ডেপুটি ডিরেক্টর দাতু আজরি বিন আহমাদ, সি আই ডির ডেপুটি ডিরেক্টর দাতু মহ আজমান বিন আহমদ সাপরি , রয়াল মালয়েশিয়া পুলিশের সেক্রেটারি ডিসিপি দাতু রামলি মোহাম্মদ ইউসুফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইউনিটের প্রধান রাজগোপাল রামদাস উপস্থিত ছিলেন।