ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আরো এক মামলা হয়েছে। এবারের মামলাটি হয়েছে অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণে সহযোগিতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগে।
গতকাল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন ওই শিক্ষার্থী আজ মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) আবারো রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় আরো পাঁচজনকে পৃথক অভিযোগে আসামি করা হয়েছে। এতে উল্লেখিত অভিযোগ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় নুরকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় নুরকে গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে আটক করে পুলিশ। এর দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে ছেড়ে দিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে আবার তুলে নিয়ে যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরে রাত ১টার দিকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত রবিবার রাতে রাজধানীর লালবাগ থানায় নুরুল হক নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এটিকে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে গতকাল টিএসসিতে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে নুরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় শাহবাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে গোলযোগ হয়। এ সময় সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ও পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই মিছিল থেকে নুরসহ সংগঠনটির সাতজনকে আটক করে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) ওয়ালিদ হোসেন রাত পৌনে ৯টার দিকে কালের কণ্ঠকে জানান, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশকে মারধর করার অভিযোগে তাঁদের আটক করা হয়েছে। তবে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নুরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখা যায়।
রাত ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নুর ও তাঁর সংগঠনের একজনকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি মেডিক্যালের গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় নুরের কর্মী-সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে। এ বিষয়ে রমনা ডিভিশনের ডিসি (ডিবি) এইচ এম আজিমুল হক জানান, আগে থেকেই নুরের অ্যাজমার একটু সমস্যা ছিল। এ জন্য তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, নুরসহ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
রাত ১টার দিকে পুলিশের আরেকটি সূত্র জানায়, নুরসহ আটক সাতজনকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে নুরসহ আটক অন্যদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে রাত ১০টার দিকে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, আটক করে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নুর অসুস্থ বোধ করায় মুচলেকা নিয়ে তাঁকেসহ অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।