বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে মিন্নিসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান ২০০ পৃষ্ঠার এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় খালাস পেয়েছেন চারজন।
রায়ের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ২টা ৫০ মিনিটে মিন্নিকে আদালত থেকে ডিবির একটি কালো মাইক্রোবাসে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর ১০ মিনিট পর ফাঁসির সব আসামিদের পুলিশের প্রিজন ভ্যানে কারাগারে নেওয়া হয়। এ সময় অন্য একটি গাড়িতে খালাসপ্রাপ্তদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ভূবন চন্দ্র হালদার।
এদিকে, আজ ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে এ মামলার আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান এবং আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। বাকি চার আসামি মো. মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, কামরুল ইসলাম সাইমুন এবং মো. সাগরকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে মুসা পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন আদালত।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরের দিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। এরপর ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; দু’ভাগে বিভক্ত করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন।