নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার সহযোগী জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুটি করে মোট চারটি মামলা করেছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে চকবাজার থানায় র্যাবের পক্ষ থেকে এসব মামলা দায়ের করা হয়। রাত ১২টার দিকে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার বিকালে র্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও আধিপত্য বিস্তারের কাজে ওয়াকিটকি ব্যবহার করতো ইরফান। ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতো সে। তার বাড়ি থেকে বিদেশি মদসহ অন্য মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে দুটি, দুটি করে মোট চারটি মামলা করবে।’
এর আগে সোমবার (২৬ অক্টোবর) ইরফান সেলিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে সোমবার ভোরে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন, ইরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, হাজি সেলিমের মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দীপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন। দীপুকে তিন দিন ও মিজানুরকে একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওয়াসিফ আহমদের মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় হাজি সেলিমের গাড়ি। ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে পেছন পেছন এলে কলাবাগানের ট্রাফিক সিগন্যালে হাজি সেলিমের গাড়ি থেকে দুই-তিন জন ব্যক্তি নেমে ওয়াসিফ আহমদ খানকে ফুটপাতে ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে গালাগাল করে ও হুমকি দেয়। পরে ট্রাফিক পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। পথচারীরা এই দৃশ্য ভিডিও করেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পুলিশ হাজি সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার ও গাড়ি জব্দ করে।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) মামলা দায়েরের পর দুপুরে র্যাব পুরান ঢাকায় চকবাজারের ২৬ দেবীদাস লেনে হাজি সেলিমের বাসায় অভিযান চালায়। র্যাব হাজি সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে হেফাজতে নেয়। বাসায় অবৈধভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুই জনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন। তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।