নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম এখন ধানমন্ডি থানার হাজতখানায় তিন দিনের রিমান্ডে আছেন। তার কোনো স্বজন খোঁজখবর নিতে থানায় আসেনি। থানা থেকেই তাকে দুপুর ও রাতের খাবার দেওয়া হয়েছে।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী জাহিদকে তিনদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধানমন্ডি থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে দুই আমামিকে আদালত থেকে ধানমন্ডি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশফাক রাজীর হাসান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুই আসামি ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুই আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুপুরের পর পরই তাদের ধানমন্ডি থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের হাজতখানায় রাখা হয়।
তিনি আরো জানান, ইরফানের কোনো স্বজন থানায় তার খোঁজখবর নিতে আসেনি। থানা থেকে বরাদ্দকৃত খাবারই তাকে দেওয়া হয়। দুপুরে ও রাতে দুই বেলায় ভাত তরকারি দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী রাতেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ বিষয়ে কথা হয় ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, থানার হাজতখানায় আসামিদের খাবারের জন্য সরকার থেকে কিছু বরাদ্দ আছে। সেই বরাদ্দকৃত থেকে ইরফান ও তার দেহরক্ষীকে খাবার দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির ঘটনায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমসহ তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলাম, গাড়িচালক মিজানুর রহমান, মদীনা গ্রুপের প্রটোকল কর্মকর্তা এবি সিদ্দিক দিপু ও অজ্ঞাতনামা তিন জনসহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী লেফট্যানেন্ট ওয়াসিফ আহমদ খান। ওই রাতেই হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২৬ অক্টোবর দুপুরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুরান ঢাকার চকবাজারে চান সরদার দাদা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অভিযানে অবৈধ দুইটি অস্ত্র, মদ, বিয়ার, ৩৮টি ওয়াকিটকি ও ভিএইএফ ডিভাইসযুক্ত ওয়াকিটকি বেজ স্টেশন জব্দ করা হয়। এরপর মদ্যপান ও বেআইনিভাবে ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ইরফানকে ১৮ মাসের সাজা দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার দেহরক্ষী জাহিদুলকে বেআইনি ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য ছয় মাসের করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।