মোঃ হাবিবুর রহমান: ঢাকা

রমজান মাসের ২৬তম দিবাগত রাতে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র শবে কদর। রাজধানীর মসজিদে মসজিদে চলছে শবে কদরের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ আলোচনা। সারাদেশের মসজিদ ও বাড়িতে বসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকিরের মাধ্যমে পূর্ণময় রাত্রটি পার করছেন। অনেকে প্রিয়জনের মাগফেরাত কামনায় করছেন কবর জিয়ারত।

শনিবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে দেখা গেছে, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ভিড়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে শবে কদর পালন করতে মুসল্লিরা আসছেন এই মসজিদে। কেউ কেউ আসছেন বন্ধুদের নিয়ে এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে। এদিন তারা্বিহ নামাজ শেষে মুসল্লিরা ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত বন্দেগি করছেন। কেউ কেউ দলবেঁধে জিকির করছেন। মসজিদ জুড়ে কেউ কদরের নামাজ আদায় করছেন, কেউবা আবার কোরআন শরিফ পড়ছেন।

এদিন মসজিদে খতমে তারাবিহ সম্পন্ন হয়। এরপর বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত হয়। তারাবিহতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার। এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম ও মুফতি মাওলানা সাকিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান। গুনাহ মাফ ও ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি মোনাজাতে তিনি দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। সারাবিশ্বের মুসলমানদের মঙ্গল কামনা করে দোয়া করেন।

মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রাত তারা নফল ইবাদতের মধ্যে কাটিয়ে দেবেন। সব বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা ও সুখ-শান্তি কামনায় দোয়া করছেন তারা। এছাড়া চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও জানান।

বায়তুল মোকাররমের নিয়মিত মুসল্লি ইব্রাহিম খলিল উচ্চকন্ঠ প্রতিনিধিকে বলেন, কদর উপলক্ষে তারাবির পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আসেন এই মসজিদে। প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত চলে ইবাদত বন্দেগি।

রাজধানীর বাংলামটর থেকে তিন বন্ধুসহ মসজিদে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম। মসজিদের উত্তর গেটে আড্ডা দিচ্ছেন তারা। জাগো নিউজকে বলেন, বাসার পাশে মসজিদে নামাজ পড়ে এখানে এসেছি। শবে কদর উপলক্ষে এখানে সবাই আসে। এক সঙ্গে ইবাদত করে এটা অত্যন্ত আনন্দের। আমরা নফল নামাজ পড়ে দোয়া করে চলে যাবো।

২০ রমজানের পর যে কোনো বিজোড় রাত শবে কদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজানের দিবাগত রাতে শবে কদর আসার সম্ভাবনা বেশি বলে আলেমদের অভিমত। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্য সময়ে এক হাজার মাস ইবাদত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, কদরের রাতের ইবাদতে তার চেয়ে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নিজেদের গুনাহ মাফ এবং অধিক সওয়াব হাসিলের আশায় নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আজকারের মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করবেন।