স্টাফ রিপোর্টারঃ
কেরানীগঞ্জে ভূমি বিক্রির নামে টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। বায়নাকৃত সম্পত্তি সাব-কবলা দলিল করে না দেওয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না মর্মে একটি উকিল নোটিশ পাঠান ভূক্তভোগী মোঃ আহসান উল্লাহ রতনের পক্ষে আইনজীবী মোঃ ফরিদ উদ্দিন। ১০ নভেম্বর ভূমির মালিক কেরানীগঞ্জ থানা চরঘুনাথপুর গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে মোঃ নাজিম উদ্দিনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশের বিবরণে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বাকা চড়াল গ্রামের মৃত শাহজাদা মিয়ার ছেলে মোঃ আহসান উল্লাহ রতন বিগত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ইং তারিখে ৩শত টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জমির মূল্য ১০ লাখ টাকা দাম ধার্য করে উক্ত নাজিম উদ্দিনকে এককালীন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ভূমির মালিক নাজিম উদ্দিন যথাসময়ের মধ্যে দালিল না করে বিভিন্ন অজুহাতে ঘুরাতে থাকে। গত ১ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখে ভূক্তভোগী বায়নার টাকা ফেরত চাইলে তার উপর চড়াও হন এবং টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন নাজিম উদ্দিন। আগামী (৭)সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করা হবে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী মোঃ আহসান উল্লাহ রতন বলেন, ‘আমি নাজিম সাহেবের নিকট থেকে জমি ক্রয় বাবদ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই যা আমাদের মধ্যে উপস্থিত স্বাক্ষীসহ একটি চুক্তিপত্রও রয়েছে। কিছুদিন পরে নাজিম উদ্দিন আমাকে জমি দলিল দিবে না বলে জানান। আমি হতাশায় পড়ে যাই। নাজিম সাহেব আমাকে বলেন, আপনার সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ। এখন জমি পাবেন না। আমি টাকাও ফেরত দেব না, আপনি যা খুশি করতে পারেন। এ ব্যাপারে আমি স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে প্রায় ২ বছর ঘুরেও কোন ফল পাইনি। গত ৫ নভেম্বর সকালে আমাকে কেরানী গঞ্জ মডেল থানায় হাজির হতে হবে মর্মে একটি নোটিশ পাই। আমি শারিরিকভাবে খুবই অসুস্থ হওয়ায় আমার ছেলেদের থানায় পাঠাই। পরবর্তীতে ছেলেরা আমাকে জানায়, এএসপি সাহেব পরামর্শ দিয়েছেন কোর্টে মামলা করতে। আমি সেই আমি ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী মোতাবেক ১০ নভেম্বর একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়।’
এ ব্যাপারে মোঃ আহসান উল্লাহ রতনের ছেলে শাহজামাল বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ মডেল থানা থেকে এএসআই বোরহান সাহেব একটি নোটিশ নিয়ে আমাদের বাড়ী আসলে জানতে চাই কিসের জন্য যেতে হবে? তিনি নিজেও জানেন না বলে আমাকে জানায়। আমি ও আমার ছোট ভাইসহ এলাকার গন্যমান্য কয়েকজন থানায় গেলে ডিউটি অফিসার আমাকে বলেন, এএসপি শাহাবউদ্দিন স্যার আপনাদের ডেকেছেন। এক পর্যায়ে আমরা সাহাব উদ্দিন স্যারের কক্ষে ডাকলে আমরা সেখানে জমির মালিক নাজিম উদ্দিন ও জমির দালাল সান্টুসহ কয়েকজনকে দেখতে পাই। সেখানে এক ডিম বিক্রেতাকে দিয়ে একটি নাটক সাজিয়ে আমাদের টাকা আত্মসাতের জন্য পুলিশের উপর মহলে একটি দরখাস্ত করান সান্টুসহ একটি চক্র। পরবর্তীতে আমাদের সকলের কথা শুনে এএসপি স্যার আমার বাবাসহ হাজির হওয়ার জন্য বলেন।’
এ ব্যাপারে ডিম বিক্রেতা বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমি কিছু বুঝিনা, আমাদের এলাকার সাংবাদিক মেহেদী যেটা করতে বলেছে আমি সেটাই করেছি।’
এ ব্যাপারে সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রার সম্পাদক পরিচয়দানকারী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমি কাউকে সহায়তা করিনি।’
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কোর্টের এপিপি জয়ন্ত চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘জমি-জমা, টাকা-পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশের দেখার কোন বিধান নেই। শুধুমাত্র কোর্ট দেখবে।’
এ ব্যাপারে এএসপি শাহাবউদ্দিনকে তার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।