করোনায় আক্রান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত নন্দিত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচকে গত বৃহস্পতিবার আইসিইউ থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সাধারণ কেবিনে নেয়া হয়েছে। সেখানে চলছে তার চিকিৎসা। আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলেও পুরোপুরি শংকামুক্ত নন তিনি।
জুয়েল আইচের স্ত্রী বিপাশা বলেন, ‘আগের চেয়ে বেটার। তবে সুস্থ এটাও বলতে পারছি না। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তবে নিশ্চিত কোনো আপডেট পাচ্ছি না। অন্য হাসপাতালগুলোর চেয়ে এখানে সিস্টেমটা একটু ভিন্ন। রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকরা বারবার দেখা করেন, তার খোঁজ খবর রাখেন। রোগীর তথ্যের ব্যাপারে তারা সচেতন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন যে তিনি এখন আগের চেয়ে সুস্থ। আমাকে সাহসও দিচ্ছেন। আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে বলেছেন। আমি সবার কাছে দোয়া চাই জুয়েল আইচের জন্য। খুব শিগগিরই হয়তো ভালো খবর দিতে পারবো।
এদিকে জুয়েল আইচের স্ত্রী বিপাশা ও মেয়ে খেয়া করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও শারীরিক ধকলটা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এ ব্যাপারে বিপাশা বলেন, ‘আসলে করোনা যার হয়নি তাকে এই অনুভূতিটা বোঝানো সম্ভব নয়। সহজ করে যদি বলা যায় তাহলে সেটা হলো আপনার পেটে একটা ছুরি ঢুকেছে সেটা আপনি বের করে ফেলেছেন। কিন্তু ব্যথাটা বা ক্ষতটা কি সঙ্গে সঙ্গেই ছাড়বে? ছাড়বে না। অনেকদিন ভুগতে হয়। তেমনি ছুরি হলো করোনা। করোনা চলে গেছে কিন্তু তার প্রভাবটা শরীরে এখনো রয়ে গেছে। আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে আমি কথা বলতে গিয়ে হাঁপাচ্ছি। শ্বাসকষ্টটা এখনো সারেনি। তাছাড়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আমার নিউমোনিয়াও হয়েছিলো। সাধারণত করোনা রোগীর নিউমোনিয়া হলে সেটা খুবই ভয়ংকর। প্রচুর মানুষ মারা গেছে আমাদের দেশে। স্রষ্টার বিশেষ কৃপায় বেঁচে গেছি আমি।’ তবে বিপাশার চেয়ে অনেকটা ভালো আছেন তার মেয়ে খেয়া।
গেল ৪ নভেম্বর থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন জুয়েল আইচ। শুরুতে গুরুত্ব না দিলেও পরে জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি কভিড-১৯ পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে জানতে পারেন তিনি কভিড-১৯ পজিটিভ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সেখানে সন্তোষজনক সেবা না পাওয়ায় হাসপাতাল বদলাতে বাধ্য হয় তার পরিবার। নেয়া হয় সিএমএইচে। তার ফুসফুস ৪০ শতাংশের মতো সংক্রমিত হয়েছিল করোনার আক্রমণে। করোনা ছাড়াও জুয়েল আইচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় দীর্ঘদিন থেকেই ভুগছেন।