১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর শেষ স্প্যানটি জুড়ে যাবে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত।

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি পিলারের ওপর স্থাপন করা হয়েছে। ৪১তম এই স্প্যানটি সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হচ্ছে। স্প্যান বসানোর কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে একটি ভাসমান ক্রেনে করে খুঁটির কাছাকাছি নেওয়া হয় শেষ স্প্যানটিকে।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হচ্ছে। স্প্যানটি খুঁটি থেকে ২০ মিটার দূরে ভাসমান ক্রেনে রাখা ছিল। সকাল ১০টার দিকে স্প্যানটি নিয়ে খুঁটির দিকে রওনা দেয় ভাসমান ক্রেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্প্যান নিয়ে ভাসমান ক্রেন খুঁটির কাছাকাছি পৌঁছে যায়। এরপর ১১টার দিকে এটি পিলারের ওপর বসানোর কাজ শুরু হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্প্যান বসাতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগে। সেই হিসাবে স্প্যান বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

এটি স্থাপনের মাধ্যমে যুক্ত হবে পদ্মার এপার-ওপার। দৃশ্যমান হবে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পুরো পদ্মা সেতু।

গতকাল বুধবার বিকেল সোয়া ৫টায় মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে স্প্যানটি ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের (খুঁটি) কাছে নিয়ে যেতে যাত্রা শুরু করে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এটি আজ বসানো হবে।

ক্রেনটি স্টিল ট্রাস জেটি ছাড়ার সময় সেখানে কর্মরত প্রকৌশলী ও কর্মীদের চোখে-মুখে আনন্দের ছাপ ফুটে ওঠে। কোনো জটিলতা ছাড়া স্প্যানটি বসানো সম্ভব হলে তাঁদের সোয়া তিন বছরের শ্রম দেওয়া সার্থক হবে। পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, দুপুর ২টায় স্প্যানটি নিয়ে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই-এর রওনা দেওয়ার কথা থাকলেও ঘন কুয়াশার কারণে বিকেল সোয়া ৫টায় রওনা দেয়।

পদ্মা সেতুর একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল বলেন, ‘এখানে অনেক সময় কুয়াশা এত বেশি হয় যে দুই ফুট দূরত্বেই কিছুই দেখা যায় না। কুয়াশার কারণে যদি বিঘ্ন না ঘটে তাহলে বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে স্প্যান বসানো সম্ভব হবে।’ পদ্মা সেতুতে এ পর্যন্ত ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। বন্যা, নদীভাঙন, চ্যানেলে নাব্যতা সংকট, করোনাভাইরাস মহামারিসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে একে একে এসব স্প্যান বসানো হয়। বাকি আছে এই একটি। গত ৪ ডিসেম্বর ৪০তম স্প্যানটি বসানো হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসে। সেই হিসাবে তিন বছর দুই মাস ১০ দিনে বসানো শেষ হচ্ছে সেতুর সবকটি স্প্যান।