রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
আজ সকাল পৌনে সাতটার দিকে তিনি নিজ বাসায় স্ট্রোক করেন। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ আরামবাগে নেওয়া হয়েছে। মরহুমের পরিবারসূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তার মৃত্যুতে মুরিদরা শোক প্রকাশ করেছেন সোশ্যাল সাইটগুলোতে, দেওয়ানবাগের ফেসবুক পেইজে নানাভাবেও শোক প্রকাশ করা হচ্ছে।
ফেসবুকে এক মুরিদ শোক প্রকাশ করে লেখেন, মুরিদের মোর্শেদ কখনও মরে না। আমাদের সকল আশেকে রাসুল ভাই ও বোনদের ধৈয্য ধারণ করার মতো শক্তি দান করেন। ফেসবুকে আরেক এক মুরিদ লেখেন, মুরিদের মোর্শেদ কখনো মরে নাই, তিনি আছেন মুরিদের অন্তরে।
আশেকা রাসুল নাফিজা সুলতানা নামের আরেব মুরিদ লেখেন, বাবা তুমি আমারে ছাইড়া কোথায় গেলা। বাবা আমি তো এতিম হইয়া গেলাম। আরেকজন লেখেন, মুরিদের মোর্শেদ কখনো মরে না। মোর্শেদ আছেন, ছিলেন, থাকবেন চিরদিন, চিরকাল, চিরজীবন মুরিদের অন্তরে।
দেওয়ানবাগ দরবার শরিফের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, দেওয়ানবাগী পীরের নাম মাহবুব-এ-খোদা। তবে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ নামে পরিচিত। ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
ফরিদপুরে চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমেদ চন্দ্রপুরীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন দেওয়ানবাগী পীর। এরপর তার মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন দেওয়ানবাগী। এর সুবাদে শ্বশুরের কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন।
তার কিছুদিন পর নিজেই নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগ নামক স্থানে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট পরিচয় দিতে থাকেন মাহবুব-এ-খোদা। আস্তে আস্তে তার অনুসারী বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন দেওয়ানবাগী।