নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
হবিগন্জ বানিয়াচংয়ে বিয়ে বাড়িতে বর পক্ষের লুকজনের সাথে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে দফায় দফায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১৫জন আহত খওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের সাথে যাওয়া ৫ জন’কে হাসপাতাল থেকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে রাত ১১টার দিকে থানা থেকে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ারও খবর পাওয়া যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে ২১জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চতুরঙ্গ রায়েরপাড়া গ্রামে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,চতুরঙ্গ রায়ের পাড়া‘র সৌদি প্রবাসী হাফিজউল্বা উল্লার সর্ব কনিষ্ঠ কন্যাকে বিয়ে করার জন্য সদরের ১নং ইউপি’র মজলিশপুর বন্দের বাড়ি গ্রামের রফিক উল্লার পুত্র ওমান প্রবাসী শাহ আলম বরযাত্রী নিয়ে আসেন কনের বাড়িতে। বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রী আসার পর উভয় পক্ষের নিমন্ত্রন আসা মেহমানগনদের খাওয়ার পরিবেশন শুরু করা হয়। এদিকে কনের পক্ষের দাওয়াত খেতে যান প্রতিবেশী ইরফান উল্লার পুত্র সাজু মিয়া।
কিন্তু সাজু মিয়া বসার স্হান না হওয়ায় ফেন্ডেলের ভিতরে দাড়িয়ে থেকে মেহমানগনদের খাওয়াতে সহযোগীতা করেন। এক পর্যায়ে বর পক্ষের সাথে আসা এক মহিলা একটি গ্লাস পরিস্কারের কথা বলেন সাজুকে। এই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় উভয়ের মধ্যে তর্ক বিতর্ক। এক পর্যায়ে বরযাত্রীগন সাজুর সাথে অশোভন আচরন করায় সাজুসহ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আত্মীয় স্বজন। এক পর্যায়ে বরযাত্রীদের উপর চড়াও হয়ে হামলা চালিয়ে বরসহ ৩ জনকে আহত করা হয়। সাজুর লোকজন হামলার সময় কনে পক্ষের আরেক প্রতিবেশী যাবু মিয়ার পুত্র সোহেলের তর্ক বিতর্ক শুরু হয় এবং সুহেলের আপন ছোট ভাই কনের ফুফাতো বোন জামাই সামাল দিতে গিয়ে আহত হয়। ছোট ভাই আহত হওয়ার খবরটি চলে যায় তার আত্বীয় স্বজনের কাছে। খবর পেয়ে সোহেলসহ তাদের লোকজন পরবর্তীতে সাজুকে বাজারে যাবার পথে তার উপর হামলা করে সাজুকে আহত করে এবং তার একটি ব্যাবহৃত মোটরসাইকেল রেখে দেয়।
পরবর্তীতে বিকাল ৫টার দিকে পুনঃরায় সাজু ও সোহেলের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সহকারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন মহল্লার সর্দার প্রদানগন প্রান প্রন চেষ্টা চালিয়ে মাগরিবের আজানের পর পর পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছেন। সংঘর্ষে সাজুর ছোট বোন জামাতার একটি দোকান ও তাদের একটি ঘরের আসবাবপত্র পত্র ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাজু পক্ষের লোকজন। অন্যদিকে প্রথম সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে মেয়ের বাড়িতে গিফট নিয়ে আসা রিসিভার টেবিলে নগদ টাকা পয়সা ও লিস্টের কাগজপত্র এবং দুটি মোবাইল ফোনসেট লুটপাট করা হয়েছে বলে এমন অভিযোগ করেন কনে পক্ষের লুকজন।
এছাড়াও তাদের নতুন দামানসহ ১৫জনের মতো বরযাত্রী না খেয়ে কনে নিয়ে কোন ভাবে তারা বিদায় হয়ে চলে যান। তারপর শুরু হয় আবারও সংঘর্ষ উভয় পক্ষের কয়েক দফা সংঘর্ষে বর শাহ আলম(২৮)সহ উভয় পক্ষের ১৫জন আহত হন। আহত অন্যান্যরা হলেন সাজু(২৮),আয়েশ(১৮)জমিলা বিবি(৭০),শেখ সাদী(৩৫),ইসলাম উদ্দিন(৫০),নাজমা বেগম(৩৮),সেফন বেগম(২২),রিতা(২০),হাবিব মিয়া(৪২),মাসুম(২০),সাহেদ উল্লা(৫৫),রাজা(২৮) প্রমূখ।
এই ঘটনাটি সর্বত্র জানাজানি হয়ে পড়লে এক আলোচনা সমালোচনার জন্ম নেয় এবং এই ঘটনার জন্য সংঘর্ষকারী উভয়পক্ষকে ধিক্কার জানাচ্ছেন অনেকেই। তবে এই রিপোর্ট লেখাকালীন সময় পর্যন্ত থানায় কোন পক্ষ থেকেই অভিযোগ করা হয়নি বলেও জানাযায়।।