বাংলাদেশ ও ভারতের ৫০ জন চিত্রশিল্পী তাদের রঙ-তুলির ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুন প্রদর্শনী গ্যালারিতে ‘বঙ্গবন্ধু শব্দটি আমাদের’ শীর্ষক এ চিত্র প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা হয়। এ চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

শনিবার থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত হয় প্রদর্শনী, যা আগামী ২ অগাস্ট পর্যন্ত বুধবার ছাড়া অন্য দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রদর্শনীর দুয়ার।

প্রদর্শনীটি সাজানো হয়েছে সমরজিৎ রায় চৌধুরী, জামাল আহমেদ, আনোয়ার হোসেনসহ দেশের ৪৭ জন প্রবীণ-নবীন শিল্পীর চিত্রকর্মে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় স্বপ্রণোদিত হয়ে কলকাতার তিন চিত্রশিল্পী বিশ্বজিত ভৌমিক, অসিত সাহা ও অভিজিত চট্টোপাধ্যায়ও ক্যানভাসে তুলে এনেছেন এ নেতাকে। 

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া এক চিত্রকর্মে বুলেটবিদ্ধ বঙ্গবন্ধুকে তুলে এনেছেন শিল্পী আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “অনেক লোক আসে আবার মারাও যায়, মারা যাওয়ার পরে আর কারও অস্তিত্ব থাকে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এমন একজন লোক, যিনি মারা যাওয়ার পরও তার থেকে আলো ছড়িয়েছে, দেশকে ভালোবাসার আলো দিয়েছেন। তার উপরই ছবিটি আঁকা।”

মৃত্যুর পর বঙ্গবন্ধুর চেহারায় ফুটে ওঠা ‘শক্তিশালী অভিব্যক্তিই’ তাকে চিত্রকর্মটি আঁকতে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান এ চিত্রশিল্পী। তিনি আরো বলেন, “তার বাড়িতে সিঁড়ির উপরে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সিঁড়িটাই এঁকেছি। তিনি পেছনে ফিরে বসেননি। বিকৃতও দেখা যায়নি। কাজেই চেহারাতে মনের শক্তিটা ফুটে উঠেছে। সেই শক্তিটাই আমি এঁকেছি।”

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “লেখা যত সহজ ছবি আঁকা তত সহজ নয়। ছবি হৃদয়ের কথা বলে, ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। শিল্পীরা ছবি এঁকে সমাজে স্থিরতা তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে, সমাজে মানবিকতা তৈরির লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করার আবেদন জানাচ্ছি।”

এদিকে এই ধরনের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সেক্ষেত্রে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব ও গবেষক শেখ হাফিজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান ও প্রদর্শনীর আয়োজক সংগঠন স্বাধীনতা চারুশিল্পী পরিষদের আহ্বায়ক চিত্রশিল্পী আনোয়ার হোসেন।