লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে অনেকে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ এর দ্বিতীয় দিন চলছে আজ। তবে প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন রাস্তায় তুলনামূলক শিথিলভাব দেখা গেছে। প্রথম দিনে জনগণকে লকডাউন মানাতে যথেষ্ট তৎপর ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মুভমেন্ট পাস ছাড়া কাউকে পুলিশ চেকপোস্ট অতিক্রম করতে দেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেল, পুলিশ চেকপোস্টগুলো প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন কিছুটা নমনীয়। প্রথম দিন যেসব চেকপোস্টে পুলিশ বেশ কঠোর মনোভাব দেখিয়ে প্রায় প্রতিটি গাড়ি আটকে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, আজ সেই চিত্র খুব একটা দেখা যায়নি। তবে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সব রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না।

লকডাউনের প্রথমদিন পহেলা বৈশাখের ছুটি থাকায় সবকিছু বন্ধ ছিল। ফলে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছিল কম। কিন্তু দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ব্যাংক, শেয়ারবাজার, গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলা। ফলে সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ির চলাচলও বেড়েছে কিছুটা।

সকাল ৭টা থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের দলে দলে তাদের কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। গার্মেন্ট শ্রমিকরা যেহেতু তাদের কারখানার আশপাশের এলাকায় বসবাস করেন সে জন্য তাদের পরিবহনের প্রয়োজন হয়নি।

সরকার ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপ করলেও ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং শিল্প-কারখানা বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত রেখেছে। ফলে মানুষের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে।

এ দফায় ‘কঠোর লকডাউন’ কার্যকর করতে সরকারের ১৩ দফা বিধি-নিষেধে বলা হয়েছে, ‘অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসাসেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকার এবং টিকা কার্ড নিয়ে টিকার জন্য যাওয়া) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। পুলিশের পক্ষ থেকে এর মধ্যে বলা হয়েছে, কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে তা বাস্তবায়নে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে আসতে দেওয়া হবে না।

যেভাবে পাওয়া যাবে ‘মুভমেন্ট পাস’

movementpass.police.gov.bd এর ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাস সংগ্রহ করতে পারবেন যে কেউ। তবে প্রতিটি পাস একবারই ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ যাওয়া-আসার জন্য আলাদা আলাদা পাস সংগ্রহ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, যার জন্য পাসটি দরকার সেই ব্যক্তির নাম, মোবাইল ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স, যে স্থানে যাচ্ছেন সে জায়গার নাম, যেখান থেকে যাবেন সেই স্থানের নাম ও যাত্রার কারণ ইত্যাদি তথ্য পূরণ করে উল্লেখিত লিংকে আবেদনের পর পুলিশ অনলাইনে কিউআর কোড স্ক্যানারসহ একটি পাস ইস্যু করবে। এই কোডটি স্ক্যান করেই চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা আবেদনকারীর তথ্য ও যাত্রার কারণ নিশ্চিত করবেন।

তবে চলাচলের পাস প্রদানের জন্য একটি বিশেষ অ্যাপও চালু করেছে পুলিশ। যেটি ব্যবহার করে জরুরি প্রয়োজনে পাস পাবেন যেকোনো ব্যক্তি।