খুলনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে স্কুলছাত্রসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মো. মঞ্জুর শেখ (১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী খুলনার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। অপরদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১২টার দিকে মর্জিনা বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন খুলনার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম আব্দুর রাজ্জাক। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ দুটি মৃত্যুই খুলনায় প্রথম মৃত্যুবরণের ঘটনা।

মৃত শিক্ষার্থী মঞ্জুর রূপসা উপজেলার কাজদিয়া সরকারি কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। সে উপজেলার টিএসবি ইউনিয়নের উত্তর খাজাডাঙ্গা গ্রামের সবজি বিক্রেতা মো. বাবুল শেখ ওরফে বাবুর ছেলে। মঞ্জুর ২ ভাই-বোনের মধ্যে বড়।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থী মঞ্জুর শেখ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছিল। সাধারণ জ্বর ভেবে পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কিন্তু কোন উন্নতি না হওয়ায় শনিবার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। কিন্তু অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরবর্তীতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে ফেরত দেয়া হয়। পরে তাকে নেওয়া হয় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করে কয়েক ব্যাগ রক্তও দেয়া হয়। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সে মারা যায়।

স্থানীয় টিএসবি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম সকালে মৃত মঞ্জুর শেখের বাড়ি থেকে বলেন, ‘প্রথমে জ্বর হলেও কেউ বুঝতে পারেনি এটি ডেঙ্গুজ্বর। তবে, জ্বর বেশি মারাত্মক হলে তাকে শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে খুমেক হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যায়ে অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পর মৃতের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার, স্বজন, সহপাঠি ও প্রতিবেশিদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে তার মা-বাবা শোকের মাতম করছেন। কোন সান্তনা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।

অপরদিকে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মর্জিনা বেগম (৬৫) মারা গেছেন। মর্জিনা বেগম দিঘলিয়া উপজেলার ব্রক্ষ্মগাতী গ্রামের ইসরাইল সরদারের স্ত্রী। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। খুমেকের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. পার্থ প্রতীম দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মর্জিনার স্বজনরা জানান, ডেঙ্গু ছাড়াও মর্জিনা বেগম লিভার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। লিভারের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিনি। সপ্তাহখানেক আগে খুলনায় এসে খুমেকে চিকিৎসা নেন। শনিবার বেশ অসুস্থ হয়ে রাতে মারা যান। খুলনার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম আব্দুর রাজ্জাক দুজনেরই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।