টিকটক-লাইকি নিষিদ্ধ চাইলেন র্যাব ডিজি
মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত
তরুণ-তরুণীরা টিকটক-লাইকিসহ বিতর্কিত অ্যাপগুলোর মাধ্যমে অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে তৈরি করছেন ভিডিও, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ আধেয় থাকে। সম্প্রতি ভারতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। এ ঘটনার সূত্রপাতে টিকটকসহ বিতর্কিত অ্যাপগুলো নিষিদ্ধের দাবি এসেছে র্যাবের পক্ষ থেকে।
সংস্থার মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, টিকটক-লাইকিসহ বিতর্কিত অ্যাপগুলো নিষিদ্ধ করার সময় এসেছে। গতকাল শনিবার রাজধানীতে ‘কিশোর অপরাধ বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার’ নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
র্যাব ডিজি জানান, টিকটক-লাইকিসহ বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের অপরাধীদের তালিকা করা হচ্ছে। ৮২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন অপরাধের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও অনেকাংশে দায়ী। প্রযুক্তিকে গ্রহণ করে নেতিবাচক দিকগুলো পরিহার করতে হবে। যেকোনো ধরনের অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এর পরও কেউ অপরাধ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে অপরাধ কমে যাবে বলে মনে করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
দুই বছর ধরে নিখোঁজ এক বাংলাদেশি তরুণীকে বীভৎস কায়দায় যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ভারতের কেরালায় অতি সম্প্রতি ছয় সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’। এ ছাড়া গত পাঁচ দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। তাদের মধ্যে সাতজনকে রিমান্ডে নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতিরঝিল থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা জিজ্ঞাসাবাদে এরই মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, নাম বলেছে সহযোগীদের। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, ভারতের কয়েকটি রাজ্য ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অপরাধী মিলে মানবপাচারের আন্তর্জাতিক চক্র গড়ে তুলেছিল। তাদের নেটওয়ার্ক ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত।
পাচারের ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা দুটি মামলার তদারক কর্মকর্তা ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের মূলত পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই ভারতে পাচার করা হয়। এ চক্রটি ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই অনৈতিক কাজ করছে। তথ্য পাওয়া গেছে, হোটেলগুলোতে চাহিদামাফিক নানা বয়সী মেয়েদের নিয়মিতভাবে সরবরাহ করত তারা। এই চক্রের সদস্যরা টার্গেট করত স্কুল-কলেজের বখে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের।