গৃহবন্দি ছিলেন রোববার রাত থেকেই। অবশেষে গ্রেফতার করা হলো জম্মু-কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাকে। সেইসঙ্গে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে ওমর আব্দুল্লাহকে। সোমবার সন্ধ্যায় তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়, জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। এর ফলে সন্ধ্যার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে সেখানে।
এছাড়া কেপিসি`র দুই নেতা সাজ্জাদ লোন এবং ইমরান আনসারিকেও বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এর আগে রোববার মধ্যরাত থেকে তাদেরকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, শ্রীনগরের বাড়ি থেকে মেহবুবা মুফতিকে সরিয়ে নিকটবর্তী সরকারি গেস্ট হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সরকারি সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবেন বলে এদিনই বিবৃতি দেন ওমর আবদুল্লাহ। এর পরই তাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। তবে তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। এমনকি এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বা কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনও বিবৃতি দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
এর আগে তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও সোমবার জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ধারা ৩৭০ বাতিল করে ভারতের বিজেপি সরকার। এ নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন মেহবুবা মুফতি। ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না,’ বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু গত সপ্তাহে আচমকা অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়ে সমস্ত তীর্থযাত্রী এবং পর্যটকদের কাশ্মীর ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি নিরাপত্তাও ব্যাপক জোরদার করা হয় গোটা উপত্যকায়। দফায় দফায় আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো হয় সেখানে। বন্ধ করে দেয়া হয় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইন্টারনেট সেবা।
এই অবস্থায় রোববার বিকেলে সর্বদলীয় বৈঠক করেন মেহবুবা-ওমররা। আর রোববার রাতেই গৃহবন্দি করা হয় তাদের। এরপর সোমবার সকালে রাজ্যসভায় ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যা একেবারেই ভারতের গণতান্ত্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার পরিপন্থী বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধীরা। তার মধ্যেই মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হলো। সেইসঙ্গে এদিন উপত্যকায় আরও আট হাজার আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য পাঠানো হয়। বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত ও ইন্টারনেট পরিসেবা।
সূত্র- আনন্দবাজার।