দীর্ঘদিন ধরেই সাকিব আল হাসান পরছেন বাংলাদেশ দলের ৭৫ নাম্বার জার্সিটা। তার গায়ে জার্সিটা হয়ে উঠেছে ব্র্যান্ড। আরেক অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন কাকতালীয়ভাবেই পেয়ে গেছেন তার আগের ৭৪ নাম্বার জার্সিটা। এই ২ ব্যাটসম্যানের রসায়নটা এবার জিতিয়েছে বাংলাদেশকে। একইসঙ্গে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করেছে সিরিজ।

পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটিটা এসেছে ৮ম উইকেটে। যখন হারের শঙ্কায় ভুগছিলো টাইগাররা। তবে দুই টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আর সাইফউদ্দিনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো সফররতরা।

হারারেতে জিম্বাবুয়ের দেয়া ২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। যার শুরুটা অধিনায়ক তামিম ইকবালকে দিয়ে। সিরিজের ২য় ওয়ানডেতে এসেও ফর্মহীনতা কাটাতে পারলেন না এই অভিজ্ঞ ওপেনার। জিম্বাবুয়ের দেয়া রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই আউট হয়ে গেছেন তিনি।

১ম ম্যাচে শূন্য রান করে বিদায় নেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। ২য় ম্যাচে এসে কিছুটা ধীরস্থির ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করছিলেন। সহজাত ভঙ্গিতে খেলেন কয়েকটি কাভার ড্রাইভও। তবে ইনিংসে ১০ম ওভারে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ২০ রান করে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

তার বিদায়ের পরপরই আউট হয়ে যান আরেক ওপেনার লিটন দাসও। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ ২১ রান।

বরাবরের মতো ব্যর্থ ৪-এ নামা মিঠুন আলী। তার সংগ্রহ মাত্র ২ রান। মোসাদ্দেক সৈকতও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রান আউটের ফাঁদে পড়ে মাত্র ৫ রান করে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। সাকিবের সঙ্গে গড়েন ৫৫ রানের জুটি। তবে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান রিয়াদ।

এরপর মেহেদি মিরাজ ও আফিফ বিদায় নিয়েছেন দ্রুতই। দু’জনের সংগ্রহ যথাক্রমে ৬ ও ১৫।

উইকেটে বাংলাদেশ দলের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান সাইফউদ্দিন। সঙ্গী হিসেবে পেলেন এরইমধ্যে ফিফটি তুলে নেয়া সাকিব আল হাসানকে। দু’জন মিলে হাল ধরলেন দলের। ৮ম উইকেটে গড়লেন ৬৯ রানের জুটি। তাদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। জিতে নিয়েছে সিরিজটাও।

সেঞ্চুরির কাছাকাছি গেলেও, শতক ছোঁয়া হলো না সাকিবের। ৯৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সাইফউদ্দিনের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান।

এর আগে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। সকালের উইকেটের সুবিধা নিয়ে ১ম ওভারেই স্বাগতিক ওপেনার তিনাসে কামুনহুকামউইকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। আরেক ওপেনার মারুমানিকে দলীয় ৩৩ রানে সরাসরি বোল্ড করেন মেহেদি মিরাজ।

এরপর রেজিস চাকাভাকে নিয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর। ২৬ রান করা চাকাভাকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান সাকিব আল হাসান।

ফিফটির পথে এগোতে থাকা ব্রেন্ডন টেইলরকে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে আউট করেন পেসার শরিফুল ইসলাম।

তবে স্বাগতিকদের মিডল অর্ডার নিজেদের সামর্থ্যের জানান দেয়। মেয়ার্সের ৩৪, মাধভেরের ৫৬ আর দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা সিকান্দার রাজার ৩০ রানে দুইশ’ পেরোয় স্বাগতিকরা।

তবে শেষের ৩১ রানে জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে তাদের রানের লাগাম টেনে ধরেন শরিফুল-সাইফউদ্দিনরা।

ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ৪৬ রান খরচায় ৪ উইকেট তুলে নেন শরিফুল। তবে দিনশেষে সব আলো কেড়ে নিলেন সেই পুরনো সেনাপতি সাকিব আল হাসান।