বিশেষ প্রতিনিধি:
সম্প্রতি একটি চক্র উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে দেশে বিভিন্ন অপকর্ম সংঘটিত করছে এরমধ্যে বিয়ে বানিজ্য একটি। এরা প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যক্তিকে টার্গেট করে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়। পরবর্তীতে সাহায্যকারী ব্যক্তিকে ফাঁসাতে বিভিন্ন ছক আকতে থাকে। এমন অসংখ্য ঘটনা রাজধানীসহ সারাদেশে অহরহ ঘটে চলেছে। আলআমিন মৃধা নামে এমন একজন ভুক্তভোগী গতকাল ১০/০৮/২১ সন্ধ্যায় একটি অনলাইন গনমাধ্যম কার্যালয়ে লাইভ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তার সাক্ষাৎকারটি নিম্মে হুবহু তুলে ধরা হলো:
আমি আল-আমিন মৃধা (২৬),
গ্রামঃ দালালপুর, পোঃ দক্ষিণ জয়পুর, থানা – বোরহানউদ্দিন, জেলা- ভোলা। আমি তখন মোহাম্মদ পুর, থাকতাম, কাদেরাবাদ হাউজিংয়ে হোম ডেলিভারি অংশীদারী ব্যবসা ছিলো। তৎকালীন সময়ে নাঈম (২৯), পিতাঃ মোঃ ইউসুফ হোসেন উরফে বলু ডিলার, সাং উত্তর হাসান নগর, থানাঃ বোরহানউদ্দিন, জেলা-ভোলা সে ঝুমুর (২১), পিতা ঃ আব্দুর রশিদ কাজী, গ্রামঃ বাথান বাড়ি, পোঃ দরুন বাজার, থানাঃ বোরহানউদ্দিন, জেলাঃ ভোলা। মেয়েটিকে অসহায় মর্মে আমার নাম ঠিকানা ও নাম্বার দিয়ে আমার কাছে চাকুরীর সহযোগীতার জন্য পাঠায়। আমার কাছে মেয়েটি এসে অঝোরে কান্না কাটি করে এবং তাকে সহযোগীতা করার জন্য জোড়পূর্বক অনুরোধ করে।
আমি তাকে চাকুরী দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সে আমার কোম্পানির ৩জন মেয়েদের সাথে ক্যাম্পেইন করা শুরু করে। তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় ৭ দিনের মধ্যে তাকে অফিস থেকে বের করে দেই।
পরবর্তীতে সে দৃষ্টি চক্ষু হসপিটাল (মোহাম্মদ পুর) নামে একটা হাসপাতালে চাকুরী নেয়। চাকুরীরত অবস্থায় সে
পর্যায়ক্রমে অসহায় মর্মে আমার কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নেয়।
আমাকে প্রতিদিন অসংখ্যবার ফোন দেওয়া শুরু করে।
আমাকে ফোন কলে না পেলে আমার অফিসে গিয়ে বসে থাকে, বাসায় ছোট ছেলেদের কে পাঠায়। তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় আমি তার খোঁজ খবর নিতে শুরু করি, যেসব তথ্য জানতে পাই তাতে আমি বিস্মিত হই ।
এই মেয়ে পুর্বে ৩ টা বিয়ে করেছে।
এবং এর আগে সে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ১৫/২০ টা ছেলের জীবন নষ্ট করেছে একই কায়দায়। এবং মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমি এদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলামঃ ১) মেহেদি হাসান রাজিব- বোরহানউদ্দিন
(২) রাব্বি নজির -বোরহাউদ্দিন (৩) জুবায়ের আলম- কেরানীগঞ্জ (৪) শুভ- বাড্ডা, ঢাকা (৫) সোহেল, ঢাকা ও সর্বশেষ আমি।
আমি তার পরিবারকে খুজে বের করি এবং আমি তার ছোট ভাই ও তার বাবাকে মেয়ের কৃতকর্মের বিষয়ে আবগত করি।
তারা এই বিষয়ে কোন ভুমিকা পালান করে নাই। অবশেষে আমি এই চক্র থেকে বাচার জন্য উক্ত নাঈম কে (যিনি ঝুমুর কে আমার কাছে পাঠিয়েছেন) অবগত করি। সে আমাকে বললো মেয়েটি খারাপ। তাকে কিছু টাকা দিয়ে দে।
পরদিন একটা অপরিচিত নাম্বার হতে আমার কাছে ফোন আসে, সে তার পরিচয় গোপণ করে আমার আর ঝুমুরের সম্পর্ক জানতে চায়। সবজেনে আমার থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে। আমি দিতে অস্বীকার করায় আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি এবং হুমকি প্রদান করা হয়। এরপর আরও ভয়াবহ রুপ নেয় সে।
আমার পরিবার থেকে শুরু করে সিনিয়র, জুনিয়র বন্ধু-বান্ধব সকলকে সে মেসেঞ্জারে ও ফোন করে তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে সহযোগিতা চায় এবং সম্মানহানির প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়।
প্রচন্ড লকডাউনের মধ্যে আমি আমার নিরাপত্তার জন্য এবং এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
ঠিক তার ২/১ দিনের মধ্যেই পরিকল্পিত ভাবে ১১ জুন ২০২০ সালে সে আমাকে এক কনস্টেবল এর মাধ্যমে থানায় ডাকায়, সেখানে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে আটক করে। আমাকে মিথ্যা নারী ও শিশু ধর্ষন মামলা দেয়। আমি ৪০ দিন কারাগারে থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তার বাবা ও নাইমকে অবগত করি।
তার বাবা মামলা প্রত্যাহার করবে ও তার মেয়ের বিচার করবে বলে আমাকে তার এলাকা দরুন বাজারে ( বোরহানউদ্দিন) ডেকে নিয়ে একদল গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমাকে আটক করে।
আমি কোন উপায় না পেয়ে হেলাল উদ্দিন নয়ন হাওলাদার কে সেখানে ঘটনা স্থলে আসতে বলি। তিনি সেখানে গিয়েও কোন লাভ হয়নি।
ততক্ষণে মারধর করে জোড় পূর্বক আমার থেকে কাবিন নামায় স্বাক্ষর নেয় তার ভাই বাবুল কাজী (৩৫) ও তার বাবা।
অথচ এই মেয়ে তখনও কেরানীগঞ্জ রহিত পুরের জুবায়ের আলম-এর বিবাহিত স্ত্রী ছিলো এবং ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো।
কাবিনে সাক্ষর শেষে তাকে বাড়িতে রেখে আমি ঢাকায় চলে আসি, তার পরিবারের সাথে কথা বলে। কিন্তু পরদিন সে আমাকে না জানিয়ে ঢাকায় আমার ব্যাচেলর বাসায় এসে উঠে।
৩ দিন পর সে আমার থেকে ডিভোর্স চায়। আমি তাকে ডিভোর্স দিতে অস্বীকার করায় আমার জীবনে নেমে আসে আরও ভয়ংকর পরিনতি। আমাকে শারীরিক মানুষিক টর্চার সহ আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া শুরু করে। সে তার ইচ্ছে মতো চলাফেরা করে আমি বাধা দেয়ায় গত ১ বছরে ৯৯৯ এর সহযোগিতা নিয়ে সে ১৮ বার আমাকে গ্রেফতার করায়।
আমি ঝুমুরের নির্যাতন ও হয়রানি হতে রেহাই পেতে তার বাবা, মা, ভাই বোন, ভাবি সহ সকলের সহযোগিতা চাই কিন্তু তারা কোনো সমাধান না দিয়ে উল্টো আমার তাকে ডিভোর্স দিয়ে কাবিনের টাকা দিতে বলে। তখন বুঝতে পারি তার পরিবারের সম্মতিতেই সেই এধরণের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
সর্বশেষ আমি উকিলের এর কাছে গেলে থানা থেকে ফাইনাল রিপোর্ট নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
আমার মামলার ফাইনাল রিপোর্ট এর জন্য ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমার বিরুদ্ধেই চার্জশিট করায় ঝুমুর।
এরপর তার আধিপত্য আরো বেড়ে যায়। তিলে তিলে আমাকে শেষ করে দিয়েছে মেয়েটি, আমার জীবনটা আজ হুমকির মুখে, আমি বাঁচতে চাই। আমি ও আমার পুরো পরিবার আজ হুমকির মুখে।