জ্যোতি চৌধুরী
বাংলাদেশে বহুল আলোচিত একটি বিষয় হলো পদ্মা সেতু।শুরুতেই কাজে হোচট খায় বাংলাদেশ। দুর্নীতির উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্বব্যাংক ৬ কি. মি. দীর্ঘ এই সেতুর ১.২ বিলিয়ন (৭৬৪ মিলিয়ন পাউন্ড) ঋন বাতিল করে। তার পরেও বাংলাদেশ এটা বানানোর পথ থেকে সড়ে আসে নাই।নিজেস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্পের কাজ অল্পঅল্প করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখন প্রায় শেষের দিকে। যখন বাংলাদেশ এই প্রকল্পে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে তখনি নানা বিপত্তিরে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এই প্রকল্পে সব চাইতে বেশি সাহায্যকারী দেশ হলো চীন।তারা তাদের দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার সহ প্রায় সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পদ্মা সেতুর উন্নয়ন ও চীনের সাথে সহাবস্থান কারা যেনো মেনে নিতে পারছে না? যদিও মেনে না নেওয়ার যৌক্তিক কারন আছে বটে।
কারন ” পাশের বাড়ির ধনী লোক চায় না, তার পাশের গরীব লোকটা ধনী হয়ে যাক “। তার মানে এই সেতু তৈরি হলে পদ্মার অই পারের লোকগুলো উন্নতি করুক আর যোগাযোগে এগিয়ে আসে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করুক এটা কারা যেনো চায় না? ২০২১ সালের ২২ এ জুন ঝাও জিয়ানপেং নামের ২৬ বছর বয়সি চাইনিজ ইঞ্জিনিয়ার মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় সেতুতে কর্মরত অবস্থায় নিখোজ হন।উক্ত রহস্যময় নিখোজের পর বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নদী তন্ন তন্ন করে খুজে তার অস্তিত্ব পায় নি।পরে সেতুর ম্যানেজমেন্ট জানায় পানিতে পরে নিখোজ হতে পারে?উক্ত ঘটনা সহ আরো কিছু ঘটনার পরে ২৮ তম ইস্ট বেংগল রেজিমেন্ট সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় অনেক নাগরিককে আটক করেন।কি কারনে এতো গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর জায়গায় প্রবেশ করলো তা সবার মনে প্রশ্ন জাগায়?
শুধু ঘটনা এখানেই নয়,বরিশালের পিরোজপুরের কোচা নদীর উপর দিয়ে বাংলাদেশ – চীন ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজের ইঞ্জিনিয়ার লাউ ফান (৫৮) আততায়ীর হাতে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এছাড়াও সিলেটে কুমাড়গাও পাওয়ার প্ল্যান্টে ওয়েনতাও উই (৪৮) ছুরিকাঘাতে নিহত হয়। গত জুলাই মাসের শেষের দিকে একটি ফেরি সজোরে এসে ধাক্কা খায় পদ্মাসেতুর পিলারের সাথে। তার পর গত ৯ আগস্ট আবার আরেকটি ফেরি এসে ধাক্কা খায় সেতুর আরেকটি খুটিতে। এই যে এখন বসে আর্টিকেল টা লিখতেছি আর খবর পড়তেছি আজ ১৩ আগস্ট পদ্মাসেতুতে ” কাকলি ” নামের আরেকটি ফেরি ১০ নাম্বার পিলারে আবার ধাক্কা দেয়।
এই ঘটনা অনেকের কাছে কাকতালীয় মনে হলেও অনেকের কাছেই নিছক কোন ঘটনা নয়।ঘটনা গুলো পুর্ব পরিকল্পিত নাকি তা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে? শুধু পদ্মাসেতু না চীন পদ্মাসেতুর পর বাংলাদেশকে সাহায্য করার হাত প্রসারিত করেছে বাংলাদেশও নিজেদের দুয়ার খুলে দিয়েছে চীনের জন্য। তিস্তাবাধ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় এই বাধ তৈরিতে চীন বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ডলার ঋন দিবে। চায়না বাংলাদেশকে ‘সিস্টার সিটি ‘ বানানোর প্রপোজাল দিয়েছে। এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা ধারনা করছে চীন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার হতে পারবে। এছাড়াও, বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে বাংলাদেশ ইতিবাচক নেওয়াই হতে পারে অনেক দেশের চিন্তার কারন? চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সামরিক জোট কুয়াড (Quad) এ বাংলাদেশের যুক্ত না হওয়ায় আন্তর্জাতিক চক্রান্তের স্বীকার হতে পারে। খুশির সংবাদ এই যে, সরকার আজ সম্ভাব্য বিদেশি শত্রু ও গোয়েন্দা তৎপরতা রোধে সেনা সদস্যদের নিয়োজিত করেছে বলে খবরে দেখলাম।
এছাড়াও,সিসি ক্যামেরা ও আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে ও দুইজন সেনা চলাচলকারী ফেরিতে থাকবে। বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভুমি অতএব সবাই সবার নিজ জায়গা থেকে চোখ কান খোলা রাইখেন। শুধু সেনাসদস্য দেরই দায়িত্ব নয় আমাদের দেশকে রক্ষা করা আমাদের নিজেদেরো দায়িত্ব আছে কেউ যদি উক্ত এলাকায় যে কোন সন্দেহ জনক কিছু দেখতে পান সরাসরি সেনা ও পুলিশ বা কোস্টগার্ডকে জানাবেন।