নামে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি তবে আদতে এটি ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই।
বৈশ্বিক এই আসরে বাংলাদেশ দলের নৈপুণ্যের স্মারক খুব বেশি নেই। সেই অর্থে মোটে একটি, ২০০৭ ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়। পরের পাঁচ আসরে আইসিসির পূর্ণ কোনো সদস্য দেশের বিপক্ষেই জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। এবার সেই ক্ষুধা মেটানোর লক্ষ্য নিয়েই আজ ওমানের উদ্দেশে উড়াল দিচ্ছেন মাহমুদ উল্লাহরা।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অবশ্য শুরু হতে দেরি আছে। প্রথমে প্রিলিমিনারি রাউন্ড। ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাছাই পর্বের ম্যাচ দিয়ে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরপর ১৯ ও ২১ অক্টোবর যথাক্রমে ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বাধা টপকাতে পারলে বিশ্বকাপের মূল পর্বে নাম লেখাতে পারবে মাহমুদের দল।
জাতীয় নির্বাচক কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সম্ভাব্য সেরা দলই যাচ্ছে। আশা করব যেন ভালো একটা ফলাফল হয়। অমুক অবস্থানে দলকে দেখতে চাই—এভাবে বলা ঠিক হবে না। ভালোর তো শেষ নেই। আমি সবচেয়ে খুশি হব দল চ্যাম্পিয়ন হলে। আমি নিশ্চিত তাতে সবাই খুশি হবেন। আমি চাইব বাংলাদেশ দল যেন ভালো ক্রিকেট খেলে।’
বিশ্বকাপ পূর্ববর্তী তিনটি সিরিজের হালখাতায় কিন্তু বড় হরফে বাংলাদেশ লেখা। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজ জিতেছেন মাহমুদরা। এই ফরম্যাটে সর্বশেষ ১৩ ম্যাচের ৯টিতে জয়ী দলকে ঘিরে উচ্চাশা অপ্রত্যাশিত নয়। তবে মিরপুরের উইকেট তো আর আমিরাতে পাওয়া যাবে না। যদিও চলমান আইপিএল যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছে, তা বাংলাদেশ দলের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। তার ওপর আসর শুরুর এত আগে পুরো দলকে পাঠানোর পেছনে বিসিবির মূল উদ্দেশ্য— দলকে প্রস্তুতির সর্বোচ্চ সুযোগ করে দেওয়া।
আগামীকাল ওমানে পৌঁছে ৯ অক্টোবর আমিরাতে যাবে বাংলাদেশ দল। সেখানে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে আবার ওমানে ফিরতে হবে বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলার জন্য। আগেভাগে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণও আছে। কভিড পরিস্থিতির কারণে বায়ো বাবলে থাকার বাধ্যবাধকতা আছে। আসর শুরুর আগে ছয় দিনের সেই বায়ু সুরক্ষা বলয় ওমানেই মাহমুদদের জন্য তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী, ‘স্কোয়াডের সব সদস্যকে পাঁচ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে প্রতি পাঁচ দিন অন্তর কভিড টেস্ট করাতে হবে। আর কোয়ারেন্টিনের সময় তিনবার পরীক্ষা হবে।’
ওমান সরকারেরও নিজস্ব কভিড প্রটোকল আছে বলে জানিয়েছেন দেবাশীষ, ‘ওমানগামী যাত্রীদের অবশ্যই কভিড টিকাগ্রহণ সম্পন্ন হতে হবে। সেই সঙ্গে কভিড নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে এক দিনের রুম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তাতে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে আবুধাবিতে যাওয়ার আগে ওমানের রাজধানী মাসকাটে চারটি প্র্যাকটিস সেশন পাচ্ছে বাংলাদেশ দল।
গতকালও মিরপুরে অনুশীলন করেছেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বেশ কয়েকজন সদস্য। তবে আনুষ্ঠানিক ক্যাম্প হবে ওমানে। ছুটিতে থাকা জাতীয় দলের কোচিং স্টাফরা দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন মাসকাটে। আইপিএলের কারণে দলের সঙ্গে পরে যোগ দেবেন সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। যদিও ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি আছে এই দুই তারকার। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তার কথায় ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে, ‘ওদের (সাকিব ও মুস্তাফিজ) দল ফাইনালে (আইপিএল) উঠলে কী হবে, বলা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে প্রস্তুতি ম্যাচে তাদের না-ও পাওয়া যেতে পারে। অবশ্য এটা বড় কোনো সমস্যা না। ওরা তো খেলার মধ্যেই থাকবে।’
সাম্প্রতিককালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এবং টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা বাংলাদেশ দলের কারোরই ম্যাচ প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকার কথা নয়।