আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন । ১৯৬৪ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে তাঁর জন্ম।
‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ তাঁর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে। এবারই প্রথম ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে শেখ রাসেলের জন্মদিন উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে এ বছর থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। শিশু-কিশোরদের কাছে শেখ রাসেলকে তুলে ধরতে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘শহীদ শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন উপলক্ষে আমি শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। দিনটিকে যথাযথভাবে উদযাপনের নিমিত্তে সরকার এ বছর প্রথমবারের মতো শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত প্রিয় লেখক ছিলেন খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী বার্ট্রান্ড রাসেল। জাতির পিতা বার্ট্রান্ড রাসেলের বই পড়ে বঙ্গমাতাকে ব্যাখ্যা করে শোনাতেন। তাই বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গমাতা দুজন মিলে শখ করে তাঁদের আদরের ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন রাসেল। রাসেল নামটি শুনলেই প্রথমে যে ছবিটি সামনে আসে তা হলো—হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণচঞ্চল এক ছোট্ট শিশুর দুরন্ত শৈশব; যে শিশুর চোখগুলো ছিল হাসি-আনন্দে ভরপুর। মাথাভর্তি অগোছালো চুলের সুন্দর একটি মুখাবয়ব, যে মুখাবয়ব ভালোবাসা ও মায়ায় মাখা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেখ রাসেল আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আছে তার পবিত্র স্মৃতি। বাংলাদেশের সকল শিশুর মধ্যে আজও আমি রাসেলকে খুঁজে ফিরি। এই শিশুদের রাসেলের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এমন এক উজ্জ্বল শিশুর সত্তা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের শিশুরা বড় হোক। খুনিদের বিরুদ্ধে তারা তীব্র ঘৃণাবর্ষণ করুক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে তারা এগিয়ে আসুক।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শেখ রাসেলকেও হত্যা করে বিপথগামী সেনা সদস্যরা। রাসেল রাজধানীর ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করতে ১১ বছরের শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়।
আ. লীগের কর্মসূচি : আজ সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অন্যান্য সংগঠনের কর্মসূচি : আজ সকাল ৯টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আয়োজনে ‘শহীদ শেখ রাসেল শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ২০২১’ অনুষ্ঠিত হবে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র কমপ্লেক্সে এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়সংশ্লিষ্টরা সকাল সাড়ে ৭টায় ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন। সকাল ১১টায় ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে কেক কাটা হবে। পরে শেখ রাসেলের শিশু-কিশোর জীবনের ওপর আলোকপাত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় শ্রমিক লীগের আয়োজনে বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১১টায় শেখ রাসেল শিশু সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটি বনানী কবরস্থানে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করেছে।