অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারের পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের আসরে বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভে খেলা নিশ্চিত হয়েছে। আবু ধাবিতে শনিবার নিজেদের সবশেষ ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরেছে কাইরন পোলার্ডের দল। তাদের ১৫৭ রান ২২ বল বাকি থাকতে ছাড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
আর এ হারের ফলে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো খেলবে প্রাথমিক পর্বে। অন্য দিকে প্রথমবারের মতো প্রাথমিক পর্ব এড়াতে পারল বাংলাদেশ।
এই আসরে সুপার টুয়েলভে খেলা দলগুলোর মধ্যে ২০২২ বিশ্বকাপে প্রাথমিক পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলবে শ্রীলঙ্কা, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া। বাকি আট দল অস্ট্রেলিয়া আসরে সরাসরি খেলবে মূল পর্বে।
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সমান পয়েন্ট হলেও ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হেরে যাওয়ার পর ২৩৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা চলে গেছে ৯ নম্বরে। ২৩৪ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
ক্যারিবিয়ানদের হারে বাংলাদেশের মতো পরের আসরে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত হয়ে গেছে আফগানিস্তানেরও। এই মুহূর্তে ২৩৫ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে আছে তারা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারলে বাংলাদেশের নিচে নেমে গেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে এগিয়ে থাকবে আফগানরা।
পরবর্তী আসরে সরাসরি মূল পর্বে খেলবে-ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ।
এদিকে বিশ্বকাপে টাইগারদের ভরাডুবি, জন্ম দিয়েছে বিতর্ক-সমালোচনার। টি-টোয়েন্টিতে দক্ষতা বাড়াতে, বিসিবির কি পদক্ষেপ? দলকে ঢেলে সাজানোর পথে হাটবে না কি, খেলার ধরণে আনবে বদল। স্লো-লো উইকেটে না খেলে ট্রু উইকেটে খেললেই বাড়তে পারে বিশ্বমঞ্চে সাফল্য। রিয়াদ-মুশফিকদের লেগ স্পিন খেলার অভ্যস্ততা বাড়ানোর পরামর্শ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
স্পিনিং কন্ডিশনে অভ্যস্ত একটা দল, স্পিনে কেন ধুঁকবে? ফিঙ্গার স্পিনের মোকবেলায় সিদ্ধহস্ত মুশফিক-আফিফরা রিস্ট স্পিনে তো ভুগবেন-ই, সারা বছর যে ওই সুযোগই যে হয় না ওদের।
এই বিশ্বকাপের কথাই ধরুন, স্পিনের বিপক্ষে গড় চৌদ্দরও নিচে। গত তিন বছরে যেটা বিশের ঘরে ওঠা-নামা করেছে। তাহলে স্পিনিং উইকেটে খেলে কি উপকার হয়েছে এতদিনে!
পেইস-সুইংয়ে না হয় খেলা-ই হয় না তেমন, শর্ট বলে দুর্বলতা তাই বোলে কোনদিনও কি কাটবে না? প্রশ্ন তোলাই যায়, কোন কন্ডিশনে বাংলাদেশ তাহলে ভালো খেলতে জানে?
মিরপুরে স্লো-স্পিনিং উইকেট বানিয়ে দুটো সিরিজ জিতে শুধু ট্রফি আর র্যংকিংয়ের উন্নতি হয়েছিল, কিন্তু মিথ্যে আত্মবিশ্বাস কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা পরিস্কার হয়ে গেলো বিশ্বকাপে। চার-ছক্কার খেলায় রান খরায় থাকা ব্যাটারদের থেকে ভালো কিছুর আশা কি বড় স্বপ্ন নয়!
পাওয়ার প্লে-তে ম্যাচের টোন সেট করে নেয়াই যখন মূখ্য, বাংলাদেশ উইকেট হারিয়ে টিকে থাকতেই শুধু লড়েছে। শুরুর ৬ ওভারে ৩২ গড়, এই বিশ্বকাপের-ই সর্বনিম্ন। টপ অর্ডার কি এর দায় নিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাববে?
কেবল মিরপুর-চট্টগ্রামে বেশির ভাগ ম্যাচ খেলে টি-টোয়েন্টির জন্য তৈরি হওয়া, আকাশকুসুম কল্পনা মাত্র। স্লো ট্র্যাকে তাই জোর করেও পাওয়ার হিটিংয়ের তালিম দেয়া কারো পক্ষেই হয় না সম্ভব।বিশ্বকাপের এই ভরাডুবির পর পরিবর্তনের ডাকে এগুনো যে বড্ড জরুরি।