রাকিব হাসানঃ

ড্রাইভারের গাফিলতিতে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক এর বিপরীতে নিতহ হয় ১০ বছরের একটি শিশু। ঘটনাটি ঘটে গত ৯ই নভেম্বর। আলোচিত এই দূর্ঘটনার পেছনে অভিযুক্ত রাইদা পরিবহনের বাসের ড্রাইভার এবং হেলপার কে আটক করেছে র‌্যাব।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ৯ ই নভেম্বর ভোরে যমুনা ফিউচার পার্কের অপর পার্শে ফুটপাতের উপর আনুমানিক ১০ বছরের অজ্ঞাত এক শিশু মেয়েকে আহত হয়ে পরে থাকতে দেখে পথচারীরা।
তৎখনাত উপস্থিত পথচারীরা শিশুটিকে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেবার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মেয়েটির পরিচয় নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পথচারীরা মেয়েটির মরদেহ নিয়ে ঘটনাস্থলে ফিরে আসে। ভাটারা থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেপক আলোচিত হয়। ঐদিন বিকেলে শিশু মেয়েটির বাবা থানায় গিয়ে তার মেয়ে মরিয়ম আক্তার (১০) এর লাশ সনাক্ত করে। উক্ত ঘটনায় তার পিতা ঐদিন রাতেই অজ্ঞাতনামা গাড়ী চালক’কে আসামী করে  ভাটারা থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। 
দূর্ঘটনার কারন অনুসন্ধানে প্রায় অর্ধশতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে র‌্যাব। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে র‌্যাব মূল রহস্য আবিষ্কার করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়োন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে ঢাকার টঙ্গী এবং আব্দুল্লাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত রাইদা পরিবহনের বাস চালক রাজু মিয়া (২৫) এবং হেলপার ইমরান হোসেন (৩৩) কে গ্রেফতার করে। 
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে গত ০৯ নভেম্বর ড্রাইভার রাজু মিয়া এবং হেলপার ইমরান হোসেন প্রতিদিনের মতই রাইদা পরিবহনের একটি বাস নিয়ে পোস্তগোলা থেকে দিয়াবাড়ির দিকে রওনা করে। ভোরবেলস অল্প সংখ্যক যানবাহন ও যাত্রী কম থাকায় ড্রাইভার দ্রুতবেগে গাড়ি চালায়। বাসটি প্রগতি সরণি যমুনা ফিউচার পার্কে পৌঁছালে নিহত শিশু মরিয়ম বাস যাত্রীদের নিকট হতে সাহায্য চাইতে গাড়িতে উঠে। বাসটির হেলপার ইমরান হোসেন এ সময় যাত্রীদের নিকট হতে ভাড়া তুলছিলো। হেলপার ইমরান পথশিশু মরিয়ম কে গাড়িতে দেখেই তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে ড্রাইভার রাজুকে গাড়ির গতি কমাতে বলে এবং নিহত মরিয়মকে দরজার কাছে গিয়ে নেমে যেতে বলে। এ সময় বাস চালক রাজু কিছুদূর না যেতেই আবার থামতে বলায় বিরক্ত হয়ে গতি হালকা কমিয়ে শিশুটিকে তাড়াতাড়ি নামতে বলে। নিহত মরিয়ম তাড়াহুড়া করে নামার সময় হঠাৎ করে ড্রাইভার গাড়ি জোড়ে চালানো শুরু করে। শিশু মরিয়ম বাসের দরজার থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আটকৃত ড্রাইভার এবং হেলপারের বিরুদ্ধে মামলা প্রকৃয়াধীন রয়েছে।