র্যাব-১ এর অভিযানে রাজধানীর পল্টন হতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের ০১ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার। ০১ জন নারী ও ০৩ জন পুরুষ ভিকটিম উদ্ধার। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমানে দেশে মানব পাচারের মত ঘৃন্যতম অপরাধ থেমে নেই। মানব পাচারকারী চক্রের টার্গেট দরিদ্র মানুষ। পাচারকারীরা বিদেশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সহজ সরল এই মানুষগুলোকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। পাচারকারীদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে এসব মানুষ। যার অধিকাংশই নারী। এসকল নারীদেরকে বিদেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বিভিন্ন পেশায় চাকুরীর কথা বলা হলেও তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টি, দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে।
এই পর্যন্ত র্যাব-১ আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের বিদেশী নাগরিকসহ অসংখ্য মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এসকল মানব পাচারকারী চক্রের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে এবং সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কিছু এলাকায় মানব পাচারকারী চক্রের তথ্য পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২২ নভেম্বর ২০২১ ইং তারিখ আনুমানিক ০২০০ ঘটিকায় র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির পল্টন থানা এলাকা হতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ১) মোঃ শামসুদ্দিন (৬১), জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে। এসময় ধৃত আসামীর নিকট হতে ০২ টি মোবাইল ফোন, একাধিক ব্যক্তির পাসপোর্ট, ০১ টি বিএমইটি কার্ড, ০১ জন নারী ও ০৩ জন পুরুষ ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
ধৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্তমানে দুবাই এ অবস্থানরত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন (৩৭), জেলা- ফেনী এর পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এই ঘৃণ্য অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। জিয়ার সাথে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের যোগসাজসের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন কোম্পানী ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এই প্রতারক চক্র মেয়েদেরকে বিদেশ গমনে প্রলুব্ধ করে এবং কোন তরুনী বিদেশ গমনে রাজী না হলে বহুবিধ হুমকি প্রদান করে। এছাড়াও এই মানব পাচারকারী চক্র প্রবাসে গমনে ইচ্ছুক বহুবিধ পুরুষ ভিকটিম হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে অদ্যবধি শতাধিক নারীকে ভাবে বিদেশ পাচার করেছে। র্যাব এই দুর্ভাগা নারীদেরকে উদ্ধারে এবং অন্যান্য অপরাধীদেরকে গ্রেফতারে সচেষ্ট রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।