বিশ্বের ‘ফুসফুস’ খ্যাত সর্ববৃহৎ বৃষ্টি অরণ্য অ্যামাজনের আগুন নেভাতে জোরকদমে কাজ শুরু করে দিয়েছে ব্রাজিলের সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার সেনা সদস্য। ইতোমধ্যে তারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
শনিবার অ্যামাজনের আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী নামানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো। বিশ্বজুড়ে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে সেনাবাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বলসোনারো।জি-৭ সম্মেলনে আমাজনের আগুন নিয়ে বিশেষ আলোচনারও ডাক দিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। জি-৭ সম্মেলনে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর বাণিজ্যিক লেনদেন বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি আগুন আয়ত্তে আনতে না পারলে আর্থিকভাবে বয়কটের কথা ভাবছিল জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর অনেকেই।
ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড হুঁশিয়ারি দেয় যে, তারা ব্রাজিলের সঙ্গে বড়মাপের বাণিজ্যিক চুক্তিতে যাবে না। সেই সঙ্গে অ্যামাজনের আগুনকে ‘আন্তর্জাতিক সঙ্কট’ বলে আখ্যা দেয় জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেনের মতো দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও অ্যামাজনের আগুন নেভাতে ব্রাজিলকে সাহায্য করতে চেয়ে টুইট করেন।
কিন্তু তারপরও দাবানল নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে দাবানল হয়। নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্য এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না। তবে প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে ধোপে টেকেনি তার বক্তব্য। এরপর মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে সেনাবাহিনী পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি।
ব্রাজিলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, অ্যামাজনে ঘেঁষা ছ’টি প্রদেশে ৪৪ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর দু’টি হারকিউলিস সি-১৩০ বিমান যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগুন নেভাতে শুরু করে দিয়েছে। বিমান দু’টি থেকে ৩ হাজার ১৭০ গ্যালন পানি ফেলা হচ্ছে। অ্যামাজনের আগুনে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত পোর্তো ভেলহোতে পাঠানো হয়েছে ৭০০ সেনা।
অন্যদিকে বলিভিয়া সরকার বোয়িং ৭৪৭-৪০০ সুপার ট্যাঙ্কার পাঠিয়ে অ্যামাজনের আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বলিভিয়ার অধীন আমাজনের জঙ্গলের সাড়ে ৯ হাজার স্ক্যোয়ার কিলোমিটার এলাকায় ইতোমধ্যে পুড়ে গেছে।
সূত্র: সিবিএস নিউজ