উচ্চকণ্ঠ ডেস্কঃ
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে আজ শনিবার ঘোষিত হবে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স-এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। যা নিয়ে রাজ্যটিতে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বাঙালি মুসলমানরা এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এর আগে এনআরসির খসড়া থেকে রাজ্যের প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়েছিলেন। আজ শনিবার সেই সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তার পরও আতঙ্ক কাটছে না।
এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, আজ সকাল ১০টায় অনলাইনে প্রকাশ করা হবে এই এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। ভারত সরকার বলছে, যাতে কোনো অ-ভারতীয় এই তালিকাভুক্ত না হন তার জন্যই প্রথম তালিকা প্রকাশের পর এক বছরেরও বেশি সময় নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। এই নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এরই মধ্যে রাজ্যের অধিকাংশ স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত ১৭ হাজার সদস্য। সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকেও।
জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলেকে রাজ্যের করিমগঞ্জের আইনজীবী শিশির দে জানান, এনআরসি তালিকা থেকে যারা বাদ পড়বেন তাদের স্থানীয় অফিস থেকে প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত আদেশের অনুলিপি দেওয়া হবে। এটি নিয়ে তারা ১২০ দিনের মধ্যে বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন। আপিলের রায় যারা পক্ষে পাবেন তাদের নাম এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যারা আপিলে হেরে যাবেন তাদের ভাগ্যে কী আছে তা এখনো পরিষ্কার না।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এনআরসি প্রকাশ উপলক্ষে আসামের কয়েকটি অঞ্চলে জনগণের একসঙ্গে অবস্থান নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের টহলরত কর্মকর্তাদের ছবিও টুইটারে প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ যাতে গুজব ছড়াতে না পারে এবং বিদ্বেষমূলক বক্তব্য না দিতে পারে তা নজরদারিতে একটি সাইবার সেলও খোলা হয়েছে।
মূলত অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই এএনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তালিকায় নাম না থাকাদের এখনই দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে না বলে কর্মকর্তারা বারবার আশ্বস্ত করলেও এর মাধ্যমে আসামের সংখ্যালঘু বাঙালি বিশেষত মুসলমানরা ‘উইচ হান্টিংয়ের’ শিকার হতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।
অবশ্য আসাম পুলিশ এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আসাম পুলিশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণা অভয় দিয়েছেন, এনআরসিতে নাম থাকলেও কেউ বিদেশি বলে গণ্য হবেন না। একইসঙ্গে সংযোজন, নতুন করে আরও বহু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠিত হচ্ছে। তারাই করবে বিদেশি শনাক্তের কাজ।