জাতির পিতার ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন, ঢাকা, ৩১ আগস্ট। ছবি: পিআইডিছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘চাওয়া–পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আদর্শের সাথে নিজেকে গড়ে তুলবে। দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যাবে, যেন জাতির পিতার আত্মা শান্তি পায়।’
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতার ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলতে হয় তাহলে সত্যিকারভাবে তাঁর আদর্শ বুকে ধারণ করে তাঁর মতো ত্যাগী কর্মী হিসেবে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
জাতির পিতা তাঁর সারাটি জীবন কষ্ট সহ্য করেছেন, এমনকি তাঁর জীবনটি পর্যন্ত মানুষের জন্য দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা জনগণকেই সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন। আমাদের কথা কিন্তু বলেননি। বলেছেন বাংলার সাধারণ মানুষের কথা। কাজেই তিনি যাঁদের ভালোবাসতেন, তাঁদের কল্যাণ করা সন্তান হিসেবে আমি এটাকে দায়িত্ব বলে মনে করি।’
এ বিষয়টি মুজিব আদর্শের সৈনিক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী প্রত্যেকেরও দায়িত্ব বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে আমাদের এটাই প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে জাতির পিতা এ দেশের মানুষের কল্যাণে তাঁর সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন, সেই মানুষের কল্যাণে কতটুকু আমরা কাজ করতে পারলাম, সেই হিসাবটাই আমাদের করতে হবে। কতটুকু আমরা দিতে পারলাম, সেটাই হবে একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য সবচেয়ে বড় সার্থকতা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমার বাবার হাতে গড়া। আমিও এক দিন ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম। সেই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবেই আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। সেখান থেকেই আমার যাত্রা।’
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং ’৭৫–এর ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের নিয়মিত প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন এবং ছাত্রলীগের মাসিক পত্রিকা ‘জয় বাংলা’রও মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জাতি গঠনে ছাত্রলীগের ভূমিকা নিয়ে একটি তিন মিনিটের ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. জোবাইর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীব চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেইন আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং এর সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সভা পরিচালনা করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।