ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে অস্ত্র এবং মাদক আইনের পৃথক দুটি মামলায় পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। শুনানিকালে আইনজীবী আফরোজা শাহানাজ পারভীন (হীরা) সম্রাটের জন্য কেঁদে ফেলেন।
রিমান্ড শুনানির জন্য সম্রাটকে বেলা ১২টা ৪২ মিনিটের দিকে তাকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলা হয়। শুনানিকালে সারাক্ষণই তার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। ১২টা ৪৩ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে সম্রাট এবং আরমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
সম্রাটের পক্ষে আফরোজা শাহানাজ পারভীন (হীরা) রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আসামি (সম্রাট) আপনার (আদালত) কাস্টডিতে আছে। হাতকড়া পরানোর কী দরকার? আমরা তার হাতকড়া খুলে দেয়ার প্রার্থনা করছি।
তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।
আফরোজা শাহানাজ পারভীন (হীরা) আরো বলেন, প্রথমে সম্রাট যুবলীগের রমনা থানা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। এরপর যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরে সভাপতি হন। আমি তার কমিটিতে আছি। নেতাকর্মীদের বিপদ-আপদে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। কুচক্রী মহল মিথ্যা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ৬ অক্টোবর ভোরে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুর ১টা থেকে দেড়টার দিকে তাকে মাল্টিস্টোর বিল্ডিংয়ে আনা হয়। সেটা তার বাসস্থান না, অফিস। অনেকের সুযোগ আছে আসা-যাওয়ার। তাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র হতে পারে। আমি আর আমার স্বামী সেখানে গিয়েছিলাম। আমার স্বামী আমাকে বলেন, ওই কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা নাকি সেখানে বাজার করে দেয়, চলো, দেখে আসি। সেখানে গিয়ে আমরা দেখি, বাজার করা হয়েছে, রান্না হচ্ছে। আমরা সেখানে গিয়ে খেয়েও এসেছি। আর আমার স্বামী সেখানের ফ্রিজটি খুলে বাজার দেখে অবাক হন। তার পরদিন পুলিশ সেখান থেকে মাদক উদ্ধার করলো। আমরা সরকারি দলে না বিরোধী দল আছি বুঝতেছি না।
তিনি বলেন, অভিযানের ছয় ঘণ্টা পর মিডিয়াকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হলো। কিন্তু অন্যান্য অভিযানে মিডিয়া আগে ঢুকলেও এখানে তা হয়নি। ২০ বছর আগ থেকে ভাল্বের সমস্যায় ভুগছেন সম্রাট। তিনি খুবই অসুস্থ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার ভাল্ব প্রতিস্থাপন করার কথা ছিল। ১০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি লিভার, হার্টের সমসায় ভুগছেন।
এসব কথা বলার সময় আদালতে কেঁদে ফেলেন আফরোজা শাহানাজ পারভীন (হীরা)।
তিনি বলেন, সম্রাট যদি পালাতে চাইতেন তাহলে যেকোনো মুহূর্তে তা পারতেন। দলকে, নেতাকর্মীদেরকে তিনি ভালবাসেন। জনপ্রিয়তাই তার জন্য কাল হয়েছে। পরিকল্পনা করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার জামিন প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।