ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
মাহবুবে আলম বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করছি। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ থেকে হাইকোর্টে আপিল করা হলে তা দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এক রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আইন অনুযায়ী এই রায়ের বিরুদ্ধে সাজাপ্রাপ্তদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করতে হবে। তবে আইন অনুযায়ী ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য ফেনীর আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে মামলার নথি পাঠাতে হবে।
এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ রকম গুরুত্বপূর্ণ মামলায় স্বল্প সময়ে রায় হওয়া উচিত। তবে কত জনের ফাঁসি থাকবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে হাইকোর্টে।
যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত ২৭ মার্চ একই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় মুখোশধারী ও বোরকা পরা দুর্বৃত্তরা।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থা মারাত্মক হওয়ায় তাঁকে প্রথমে ফেনী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায় নুসরাত।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৯ মে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০ জুন ফেনীর বিচার শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২৭ জুন। বিচার শেষে ফেনীর আদালত আজ রায় দেন।