ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে দোষ স্বীকার করার কারণে তার এক বছরের শাস্তি স্থগিত করেছে আইসিসি। ফলে তিনি এক বছর পরই আবার খেলতে পারবেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আইসিসির দেওয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে সাকিবকে। এর মধ্যে আবারও অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে তাকে।
এখন প্রশ্ন হলো, সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া কে এই জুয়াড়ি? জানা গেছে, সেই জুয়াড়ির নাম দীপক আগারওয়াল। তিনি ভারতীয় নাগরিক। তার আসল নাম বিক্রম আগারওয়াল। অন্যতম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পর পরই লাইমলাইটে চলে আসেন তিনি।
আরও জানা গেছে, সাকিবের পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রিকেটারের মোবাইল ফোন নম্বরটি পান দীপক আগারওয়াল। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এ জুয়াড়ি।
আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মোট তিনবার সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন আগারওয়াল। তবে তার সব প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেন অন্যতম ওয়ার্ল্ড নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। তবে সেসব তথ্য আকসু কিংবা দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানাননি সাকিব।
ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কারণে আগারওয়াল এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্জাইজিভিত্তিক ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে বেশ কয়েকবার কারাগারেও গেছেন তিনি।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আইসিসির চিহ্নিত জুয়াড়ি আগারওয়াল। কাউন্সিলের কালো তালিকায় ওপরের দিকে আছে তার নাম। এ মুহূর্তে মোস্ট ওয়ান্ডেট তিনি।
জানা গেছে, আগারওয়াল মূলত একজন হোটেল ব্যবসায়ী। চেন্নাই শহরে দুটি হোটেল আছে তার। ১২৯ কক্ষের ব্যবসায়িক হোটেল ফরচুন সিলেক্ট পামস এবং পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লুর মালিক তিনি। ভিভিএ হোটেল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান ও আইটিসি হোটেল গ্রুপের সদস্য এ জুয়াড়ি।
দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মাধ্যমে হোটেল ব্যবসায় পা রাখেন আগারওয়াল। এতে চটজলদি তার ভাগ্য বদলে যায়। রাতারাতি কোটিপতি বনে যান তিনি। এরপরই জুয়াড়ি চক্রে জড়িয়ে পড়েন। বুকি হয়ে অনেক সময় ভিক্টর পরিচয়েও বিভিন্ন খেলোয়াড়, কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আগারওয়াল।
এর আগে ২০১৩ সালে ফিক্সিংয়ের দায়ে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার হন বলিউড অভিনেতা বিন্দু দারা সিং এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সাবেক সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের জামাতা গুরুনাথ মায়াপ্পান। সে সময় তারা ফিক্সিংয়ের সঙ্গে আগারওয়ালের জড়িত থাকা কথা স্বীকার করেন।