রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধ করে মিয়ানমার সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে মনোযোগী হতে কড়া বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা কেন স্বেচ্ছায় ফিরতে আগ্রহী হচ্ছে না, তার সঠিক কারণগুলো সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী উ কিয়াও তিনের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি এল।
সাম্প্রতিক ন্যাম সম্মেলনে উ কিয়াও তিন অভিযোগ করেন, ‘ধর্মীয় নিপীড়ন’, ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ ও ‘গণহত্যার’ মত শব্দ ব্যবহার করে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিকে বাংলাদেশ ‘ভিন্নভাবে’ চিত্রায়িত করছে।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করার কারণ হিসেবে মিয়ানমার ওই জনগোষ্ঠীকে ‘বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী’ আখ্যায়িত করে থাকে।
এবার তারা নতুন এক তত্ত্ব নিয়ে হাজির হয়েছে। দেশটি বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে মিয়ানমারে গিয়েছিল।
মিয়ানমারের এ ধরনের দাবিকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলেছে বাংলাদেশ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ, তথ্যবিকৃতি এবং ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থান করা ওই বক্তব্যকে বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করছে।”
বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে, যাদের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা এসেছে ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে নতুন করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান হিসেবে বর্ণনা করে আসছে।
মিয়ানমার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ায় দুই দফা চেষ্টা করেও রোহিঙ্গাদের কাউকে রাখাইনে ফেরত পাঠানো যায়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দিয়ে আসছে বাংলাদেশ।
“সঙ্কট প্রলম্বিত হওয়ার জন্য পুরোপুরিভাবে যারা দায়ী, তাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের অযৌক্তিক অভিযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”