গাড়ির ভেতরে এক ব্যক্তি আগুনে পুড়ে ছটফট করতে করতে মারা গেলেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত জনতার কেউই তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেন না। সবাই নীরব দর্শক হয়ে গাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে, হাতের স্মার্টফোনে সেই মর্মান্তিক, করুণ ছবি ও ভিডিও ধারণ করলেন। একবারের জন্য কারও মনে হয়নি, লোকটিকে বাঁচানো উচিত। নিজের জীবন বিপন্ন করে সেই ঝুঁকি নিলেন না ভিড় করে থাকা মুখগুলোর একজনও। গতকাল বুধবার হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজস্থানের কোটা-উদয়পুর হাইওয়েতে।
নেটসর্বস্ব দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক, শেয়ারের নেশাই কি মানুষকে আরও স্বার্থপর, কাণ্ডজ্ঞানহীন করে তুলছে? নাকি হাতের স্মার্টফোনে ছবি-ভিডিও নেশায় হারাচ্ছে মনুষ্যত্ব? নাকি দুটোই যুগপত্ কাজ করছে? ক্রমে ক্রমে আমরা যে কত হৃদয়হীন, অমানুষ হয়ে উঠছি, তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রাজস্থানের ওই ঘটনা।
পুলিশ বলছে, অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ওই ব্যক্তি রাজস্থানের ব্যবসায়ী। যান্ত্রিক কোনও কারণে গাড়িতে আগুন লেগে যায় বলে ধারণা। ঘটনার আকস্মিকতায় ওই ব্যবসায়ী, গাড়ির দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি। সে সময় ওই রাস্তা দিয়ে অনেকেই গিয়েছেন। তাঁরা ভিডিও করেছেন। ছবিও তুলেছেন। কিন্তু, ওই লোকটিকে বাঁচানোর কোনোরকম চেষ্টা করেননি। খবর পেয়ে পুলিশ যখন তাঁকে উদ্ধার করেন, শরীরের বেশিরভাগই পুড়ে গেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, নিহত ব্যবসায়ীর নাম প্রেমচাঁদ জৈন। রাজস্থানের অনন্তপুরায় তাঁর একটি কারখানা রয়েছে। তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে সেই কারখানাতেই যাচ্ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, শর্টসার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ড।
সূত্র : এই সময়