সর্বকালের সবচেয়ে কম দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ভারতের সর্বাধিক পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য কর্ণাটকে। পেঁয়াজের জন্য ভারতের সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেট লাঁসাগাও অনিয়ন মার্কেটে শুক্রবার সারাদিন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬ টাকা থেকে ৭ টাকা দরে। অপরদিকে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দামে এখনও লেগে আছে আগুন। একইদিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলাটি বাংলাদেশের পাইকারী বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১১০-১১৫ টাকা দরে।
পেঁয়াজের দামে হুট করে ধস নামায় ক্ষেপেছেন কর্ণাটকের চাষীরা। তাদের অভিযোগ, পেঁয়াজ রপ্তানীর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় স্থানীয় বাজারের পেঁয়াজ কোথাও যেতে পারছে না। তাই এমন ধস নেমেছে মসলাটির দামে। চাষীদের চাপে কর্ণাটকে উৎপাদিত পেঁয়াজের উপর থেকে রপ্তানী নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত সরকার।
দেশটির হর্টিকালচার কমিশনারের অনুমতি নিয়ে চেন্নাই সমুদ্রবন্দর দিয়ে এই পেঁয়াজ রপ্তানী করা যাবে। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কর্ণাটকের গোলাপী জাতের বেঙ্গালুরু পেঁয়াজ বাজারে চলে আসায় স্থানীয়ভাবে মসলাটির দাম এমন অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা সরকারকে চাপ দিচ্ছিলেন নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার জন্য।
অবশেষে ২৮ অক্টোবর বেঙ্গালুরু গোলাপী পেঁয়াজের উপর থেকে রপ্তানী নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি চালানে সর্বোচ্চ ৯ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানী করা যাবে এই জাতের পেঁয়াজ।
এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত সরকার। এরপর থেকেই বাংলাদেশে দফায় দফায় বাড়তে থাকে পণ্যটির দাম। শুক্রবারও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১১০-১১৫ টাকায় এবং খুচরা বাজারে ১৩০-১৪০ টাকায়। অতিদ্রুত এই দাম কমার কোনো সম্ভাবনার কথাও জানাতে পারেননি খুচরা ব্যবসায়ীরা।
আশার কথা হচ্ছে, মিশর ও তুরষ্ক থেকে তিনটি জাহাজ প্রায় ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ নিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের পথে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দিন। এছাড়া কৃষি মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত আগাম জাতের পেঁয়াজও নভেম্বর মাসেই বাজারে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় এবং ভারত সরকার তাদের রপ্তানী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় দেশের পাইকারী বাজারে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।