গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’। আইন বাস্তবায়নে সড়কে ফিরবে শৃঙ্খলা, কমবে যানজট, কমবে দুর্ঘটনা। এমনটি আশা করা গেলেও দুদিন ধরে রাজধানীতে তীব্র যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর বিমানবন্দর, বনানী, মহাখালী, বিজয় সরণি, বাড্ডা প্রগতি সরণি এলাকায় তীব্র যানজট। সড়কে আটকে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। গণপরিবহন থেকে নেমে সাধারণ যাত্রীদের হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, মিরপুর কালশী থেকে বনানী-কাকলী রুটের ফ্লাইওভারে চলাচল বন্ধ। দুই ফ্লাইওভারের চলাচল এখন এক ফ্লাইওভারে হওয়ায় যানজট বেড়েছে।

অন্যদিকে সকালে সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ দেশে পৌঁছার পর বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। যার রেশ দুপুর গড়ালেও কাটেনি।

jam

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বলছে, আজ (বৃহস্পতিবার) সপ্তাহের শেষ দিন। স্বাভাবিকভাবে এ দিন সড়কে চাপ বেশি থাকে। তাছাড়া আন্ডারপাস নির্মাণ কাজের কারণে একটি ফ্লাইওভারে চলাচল বন্ধ থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

বনশ্রী থেকে বাড্ডাগামী যাত্রী সবুজ মিয়া বলেন, অন্যদিনের তুলনায় আজ বেশি যানজট। সড়কে যেন যানবাহনের চাকা ঘুরছেই না। কী কারণ তাও বোঝা যাচ্ছে না। ১৫ মিনিটের পথ আসতে সময় লাগল দেড় ঘণ্টা।

বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীগামী বিআরটিসি বাসের যাত্রী তারেকুল ইসলাম বলেন, বেলা ১১টায় বেরিয়েছিলাম ব্যক্তিগত কাজে। ভেবেছিলাম এ সময়ে অফিসগামী যাত্রীদের চাপ থাকে না। দ্রুত যেতে পারবো গন্তব্যে। কিন্তু বিমানবন্দর গোল চত্বর পেরোতেই লেগেছে আধা ঘণ্টা। কুড়িল ফ্লাইওভার পর্যন্ত হাপিত্যেস করতে হয়েছে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকা পেরিয়ে বাড্ডা এলাকায় যানজটে পড়তে হয়েছে।

কালশী থেকে নিয়মিত বাড্ডায় অফিস করেন আলামিন মিয়া। তিনি বলেন, বাসা থেকে বেরিয়ে কালশী ফ্লাইওভার হয়ে কাকলীতে নেমে গুলশান-১ হয়ে বাড্ডা যাই। কিন্তু আজ আর কাকলী যেতে পারিনি। চলাচল বন্ধ। নিচেও যানবাহনের চাপে যাওয়ার কোনো অবস্থা ছিল না। বাধ্য হয়ে বিমানবন্দর ঘুরতে গিয়ে আরেক ফাঁদে পড়ার দশা। সেখানেই দীর্ঘ যানজট। সকাল গড়িয়ে দুপুরে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে অফিসে।

jam

এ ব্যাপারে ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, আজ সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। যে কারণে বিমানবন্দর এলাকায় তার সমর্থক ও দলের নেতাকর্মীদের অবস্থান ছিল। যেটার প্রভাব সড়কেও পড়েছিল।

তবে তিনি বলেন, র‌্যাডিসন হোটেল এলাকায় আন্ডারপাস নির্মাণকাজ চলছে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সেখানে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করছে। যে কারণে কালশী থেকে কাকলীর দিকে যাওয়ার লেনটি বন্ধ রয়েছে; ফলে দুই ফ্লাইওভারের চাপ এখন একটি ফ্লাইওভারে। চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজট তৈরি হচ্ছে। আমাদের ট্রাফিক সদস্যরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যদিও আগামী ২০-২৫ দিন ওই ফ্লাইওভারটি বন্ধ থাকার কারণে নিচের সড়কে ও একটি ফ্লাইওভারে যানবাহনের চাপ থাকবে।

অন্যদিকে ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাহেদ আল মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তাহের শেষ দিন এমনিতেই এ এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। তাছাড়া রিকশার কারণে একটু বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রিকশার জন্য আলাদা রুট করা হলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে সড়কে ঢুকে পড়ছে রিকশা। তখন যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।