স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান বাবুকে গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চায় নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগে বইছে এখন উৎসবের আমেজ। আগামী ২৩ নভেম্বর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগে চলছে নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ। সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের জন্য ত্যাগী, মেধাবী, নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং পরীক্ষিত নেতাদের দায়িত্বে আনার দাবি উঠেছে তৃনমূল থেকে। এরই মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন সংগঠনটির কয়েক জন নেতা। তবে গুরুত্বপূর্ণ পদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান বাবুর নাম আলোচনার শীর্ষে বলে মনে করেন বেশ কিছু নেতা-কর্মী।
ইতোমধ্যে তিনি ত্যাগী, পরিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। ১৯৬৯ সালের ১৬ই মে মাদারীপুরের একটি ঐতিহ্যবাহি মুসলিম স¤্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। পিতা- মতিউর রহমন ভূঁইয়া ছিলেন পাকিস্তান শাসন আমলে তদানিন্তন পাকিস্তান নৌ-বাহিনীর একজন কর্মকর্তা। জাতিগত বিভেদ, বৈষম্য, বিদ্বেষ ও বৈরিতার কারনে স্বাধীনের পূর্বে তিনি স্বেচ্ছায় চাকুরী ছেড়ে পশ্চিম পাকিস্তান হইতে পূর্ব পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন। দাদা আরশাদ আলী ভূঁইয়া বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন আমলে কলকাতার আলীগর বিশ্ববিদ্যালয় হইতে বৃহত্তর মাদারীপুর জেলার মধ্যে সর্বপ্রথম মুসলিম পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি মাদারীপুরের ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ছিলেন।
ঢাকা হানগর উত্তর যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, ‘বাবু ভাইর মতো নেতা যদি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হয় তা হলে উত্তর যুবলীগকে আরো সুসংগঠিত করে গড়ে তুলতে পারবেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে স্বক্ষম হবেন। আমাদের প্রাণের দাবী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাবু ভাইকে মূল্যায়ন করবেন।’
জানা যায়, ১৯৮৬ সালের স্বৈরাচার এরশাদ সরকার হঠাও আন্দোলন, ১৯৮৭ সালে ১০ই নভেম্বর স্বৈরাচার হঠাও আন্দোলন, ১৯৯০ এর গণ অভ্যূত্থান, ১৯৯৬ সালের অসহযোগ আন্দোলন, ২০০১ সালে স্বৈরাচার জোট সরকার হঠাও আন্দোলন, ২০০৬ সালে বিএনপি-মাত জোট সরকার বিরোধী আন্দোলন, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ এর দাবীতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের বিক্ষোভ কর্মসূচী, চাল, ডাল, তৈলসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় যুবলীগ ও ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রাজপথে লড়াই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে অগ্রণী ভূমিকা পান করেন আরিফুর রহমান বাবু। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক মিরপুর-১০নং গোলচত্বরে বাবুর নেত্রীতে সকল সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখেন। ২১ আগষ্ট এর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রতিবাদ সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট নির্বাচনে কেন্দ্রীয় যুবলীগ এর নির্দেশে দলীয় নির্বাচনের পক্ষে প্রচার প্রচারণা ও সার্বিক সহযোগীতায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন আরিফুর রহমান বাবু। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং মির্জা আজম এর বিরুদ্ধে জোট সরকারের দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদের যুবলীগের প্রতিবাদ সভায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২৮শে অক্টোবর ১ দফা ১দাবি স্বৈরাচার খালেদা-নিজামী জোট সরকার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। প্রধান বিচারপতি কে, এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানানোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ঢাকার পল্টন ও মুক্তাঙ্গনের প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। রাষ্টপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্ত্বাবয়াধয়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগের দাবীতে কেন্দ্রীয় যুবলীগের আহুত বিক্ষোভ কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ। নির্বাচন কমিশন অফিস ঘোরাও ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলনের কর্মসূচীতে সক্রিয় অংশগ্রহণ। ভূয়া ভোটার বাতিল ও হালনাগাদ ভোটার তলিকা প্রণয়নের দাবীতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সক্রিয় অংশগ্রহন। সকল জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচীতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল আরিফুর রহমান বাবু ভূঁইয়ার।
বিগত বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। পল্লবী থানার জিডি নম্বর- ১৩৭৫, তাং ২২/১০/২০০৪, ধারা-৫৪ দন্ডবিধি। পল্লবী থানার মামলা নম্বর-১৭(১)০৫, ধারা-৩২৩, ১৪৩, ১৭৯ ও ৫০৬ দন্ডবিধি। পল্লবী থানার মামলা নম্বর-৩৩(৮)০৫, ধারা-৩৯২ দন্ডবিধি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান বাবু ভূঁইয়া বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের একটি মিথ্যা মামলায় আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার ও দুই দিনের পুলিশি রিমান্ডে শারীরিক নির্যাতন করে। পরবর্তীতে আদালত হইতে জামিন লাভ করি। একইভাবে আরেকটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে ১৪ দিন কারা নির্বাসনের পর আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। সাংগঠনিক তৎপরতার কারনে ৩নং ওয়ার্ড যুবদল, ছাত্রদল নেতাদের দ্বারা বারবার লাঞ্চিত হই। স্বৈরাচার বিএনপি জামাত জোট সরকার হটাও আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে দলীয় কর্মসূচীতে রাজপথে অগ্রনী ভূমিকা পালনের সময় বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার হই, যার বিবরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। ওয়ান ইলেভেনের সময় গণতন্ত্রের মানষকন্যা, দেশরতœ, মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অন্যায়ভাবে মাইনাস ওয়ান ফরমুলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতার করার পর ঢাকা মহানগর যুবলীগের সর্বপ্রথম প্রতিবাদ মিছিল বের করি ও পরবর্তীতে বিবিসি নিউজকে নেত্রীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির লক্ষ্যে ব্রিফিং দেই। যার কারনে আমার ও আমার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে তৎকালিন সময়ে জরুরী বিধি ভঙ্গের জন্য পল্লবী থানায় একটি মালমলা দায়ের করা হয় যার নং ৮৬(৭)০৭ইং ধারা-৩(৪)৬ জরুরী বিধিমালা/২০০৭ইং।’ বর্তমানে আরিফুর রহমান বাবু ভূঁইয়া ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে পালন করছেন।