ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এতে তিনি ৩৮টি পয়েন্ট উল্লেখ করে ঢাকা উত্তরের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর ইশতেহারে মশা নিধনে গুরুত্ব দিয়ে বায়ুদূষণ, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন করে সুস্থ ঢাকা গড়ার প্রত্যয় রয়েছে।

আজ রবিবার বেলা ১২টার দিকে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

আতিকুলের পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনী ইশতেহার- 

১. এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্যে ফুটপাথ নেটওয়ার্ক তৈরি করা।

২. যানজট নিরসনে ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, ডিএসসিসি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। 

৩. নিরাপদে পথচারী পারাপারের জন্যে ঢাকার উত্তরে বিভিন্ন জেব্রা ক্রসিংয়ে ডিজিটাল পুশ বাটন সিগনাল স্থাপন করা। 

৪. আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ডিজিটাল ই-টিকিটিং সেবাপ্রদান, অ্যাপ-নির্ভর সময়সূচি প্রবর্তন এবং সুনিয়ন্ত্রত ও নারীবান্ধব গণ-পরিবহন নিশ্চিতকরণ। 

৫. স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন। 

৬. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা ও গণ পরিবহন নিশ্চিতকরণ। 

৭. নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ। 

৮. হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। 

৯. ঢাকা বাস রুট র‍্যাশনালাইজেশন এর কাজ সরকারের উচ্চ পর্যায়েএর সকলকে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা। 

১০. নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এক্সেলেটরসহ নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ। 

১১. সাইকেলের জন্যে আলাদা লেন (যেখানে সম্ভব) এবং সাইকেল পার্কিং তৈরি করা। 

১২. নাগরিকদের যাতায়াতের জন্যে পরিকল্পিত স্মার্ট  বাস স্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ।

১৩. প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করে সমাধান করা। 

১৪. উন্নত বিশ্বের ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতিতে ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, ওয়াসা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পাশের সিটি কর্পোরেশনসহ শংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে বছরব্যাপী মশা নিধন কর্মসূচি বাস্তবায়ন। 

১৫. টেকসই বর্জ্যব্যবস্থাপনায় আমিনবাজার আরআরএফ স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর। 

১৬. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে শহরের সকল ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব উদযাপন। 

১৭. বস্তিবাসীদের জন্য নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ। 

১৮. প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। 

১৯. ডিএনসিসির বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব সিআরএইচসিসি এবং পিএইচসিসি নির্মাণ। 

২০. মিরপুর ডিএসসিসির নিজস্ব জাআয়গায় বৃক্ষ অনুরাগীদের জন্য বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ। 

২১. সকলের জন্যে নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ। 

২২. নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাইকেন্দ্র স্থাপন। 

২৩. ডিএনসিসির প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ। 

২৪. বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। 

২৫. ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় মিস্ট ব্লোয়ার এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ। 

২৬. ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে নানাবিধ সুবিধা সম্বলিত ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি করা। 

২৭. সবার ঢাকা অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে নাগরিক সুবিধি নিশ্চিতকরণ, যেখানে মেয়রের সাথে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে। 

২৮. ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে হোল্ডিং, ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রদান। 

২৯. ব্যবসায়ীদের কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন না করে ডিএনসিসির মালিকানাধীন কাঁচা বাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্যে চলবে স্ট্রাকচারাল অ্যাপগ্রেডেশন। 

৩০. একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট নেইবারহুড পরিচালনা ইত্যাদি সম্পন্ন করা। 

৩১. নগরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞগণের সহায়তায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ। 

৩২. সকল লেক-খালের সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিয়ন্ত্রণ. পাবলিক স্পেস বৃদ্ধি করা, টেকসই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ। 

৩৩. বায়ুদূষণ রোধে ইলেক্ট্রিক বাস সার্ভিস চালুকরণ।    

৩৪. ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তৈরি হবে হেল্প ডেস্ক। 

৩৫. উত্ত ঢাকাকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে স্মার্ট নেইবারহুড হিসেবে গড়ে তোলা, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা। 

৩৬. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবাকেন্দ্র গঠন যেখানে থাকবে হেল্প ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্ট-আপ কো ওয়ার্কিং স্পেস, লাইব্রেরি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও অন্যান্য সুবিধাদি। 

৩৭. প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টরগুলোর আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার (আর্ট ক্লাস, গানের ক্লাস, ইয়োগা, আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ) নিশ্চিতকরণ। 

৩৮. জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ওয়ার্ড-ভিত্তিক সমস্যার সমাধান।