চীনের উবে প্রদেশের উহান শহরের এবং দেশটির অন্যান্য জায়গায় অবস্থান করছেন এমন ৬০০ অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের তাঁদের নিজদেশ অস্ট্রেলিয়াতে ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। ফেরত আনার পরপর তাদেরকে ক্রিসমাস দ্বীপে দুই সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টিন করে রাখা হবে।
আজ বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এই ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, দেশটির ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথওয়েলস্ রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ এপযর্ন্ত ৬ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সনাক্ত করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ঘোষণা থেকে জানা গেছে, বিশেষ ব্যবস্থায় আনা অস্ট্রেলীয়দের ক্রিসমাস দ্বীপে প্রয়োজন অনুসারে, চিকিৎসকদের পরামর্শে নিবিড় পরিচর্যার জন্য রাখা হবে এবং এই বিষয়ে সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
ক্রিসমার দ্বীপে ফিরিয়ে আনা ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দেবে অস্ট্রেলিয়া মেডিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট টিম (অজম্যাট) অস্ট্রেলিয়াকে করোনাভাইরাসমুক্ত রাখার জন্য এটি একটি প্রাথমিক ব্যবস্থা বলে স্কট মরিসন জানান।
অবশ্য এই পরিকল্পনা চীনের সাথে আলোচনা করেই বাস্তবায়ন করা হবে। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বেজিংস্থ দূতাবাস চীন সরকারের কাছে অনুমতির অপেক্ষায় আছে বলে জানানো হয়। চীন সরকারের অনুমতি পেলে উহান শহরে অস্থায়ী কনস্যুলার অফিস স্থানীয় প্রশাসনকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান পরিষেবা কোম্পানি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
আক্রান্ত ৭ জন : বুধবার সন্ধ্যায় কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের গোল্ডকোস্ট শহরে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা গেছে। ‘৪৪ বছররের চীনা নাগরিক সম্প্রতি উহান উহান শহর থেকে এসেছেন। তাকে স্থানীয় গ্রিফিত বিশ্ববিবিদ্যালয় হাসপাতালে আইসোলেটেড করে রাখা হয়েছে বলে জানান রাজ্যের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জেনেট ইয়াং।
এদিকে, দেশটির ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথওয়েলস্ রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ এপযর্ন্ত ৭ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সনাক্ত করেছে। সর্বশেষ বুধবার ৬০ বছর বয়স্ক উহান শহর থেকে ফিরে আসা এক ব্যক্তিকে সনাক্ত করে ভিক্টোরিয়া স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে এই রাজ্যে দুজনকে সনাক্ত করা গেছে বলে জানান রাজ্যের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: ব্রেড সার্টন।
নতুন স্বাস্থ্য বার্তা : এদিকে দেশেটির বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য বার্তায় চীন ও আসে পাশের দেশ থেকে ফিরে আসা মানুষকে ১৪ দিন বাসা বড়িতে অসস্থান করতে বলেছে। চাইল্ডকেয়ার, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে যারা চীন ও হংকং থেকে ফিরে এসেছেন তাদেরকে ফিরে আসার দিন থেকে অনন্ত দু’সপ্তাহ পরে নিজ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আটকা পড়েছে চীনা ফুটবল দল : করোনাভাইরাসের আতঙ্কে চীনের জাতীয় মহিলা ফুটবল দল আটকা পড়েছে ব্রিজবেনে। আজ সকালে চীনের সাংহায় থেকে আসা ৩২ সদস্যের ফুটবলদল কে কোয়ারেন্টিন করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদেরকে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পযর্ন্ত হোটলে সেল্ফ আইসোলেটেড থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কুইন্সল্যান্ড স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়ানোর আগে ফুটবল দলটি উহান শহরে ভ্রমণ করেছে। তবে দলের সবাই ভালো আছে এবং তাদের মধ্যে কোনো রোগের লক্ষণ নাই বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।