টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দেশের আটটি প্রতিষ্ঠানের অভিনব উদ্যোগ বাস্তবায়নে ২২ কোটি টাকা (২ মিলিয়ন পাউন্ড) অনুদান দেয়া হয়েছে। এটি দিয়েছে ইউনিলিভার, ডিএফআইডি ও আরন্সটন অ্যান্ড ইয়ংয়ের যৌথ উদ্যোগ গঠিত ‘ট্রান্সফর্ম’। সামাজিক উন্নয়নে অভিনব সামাজিক ব্যবসাকে উদ্বুদ্ধ করাই ট্রান্সফর্মের উদ্দেশ্য। গত দুই বছরে বাংলাদেশের এ রকম ৮টি নতুন সামাজিক ব্যবসা সংস্থাকে সহযোগিতা করেছে ট্রান্সফর্ম।
রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার ‘ট্রান্সফর্ম বাংলাদেশ এন্টারপ্রেনার শো-কেসিং ইভেন্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তারা তাদের কাজ এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেদার লেলে ছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন। আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভারের ‘সাসটেইনেবল বিহ্যাভিয়ার চেঞ্জ প্রকল্পের গ্লোবাল ডিরেক্টর রিচার্ড রাইট এবং ডিএফআইডি (ইউকে)-এর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ এবং ইনোভেশন ম্যানেজার ক্রিস এডওয়ার্ড।
অনুষ্ঠানে কেদার লেলে বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশে গত প্রায় ৫৫ বছর কাজ করছে ইউনিলিভার। মা-শিশুসহ এদেশের গণমানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছি আমরা। এদেশের সার্বিক উন্নয়নে এখানকার তরুণ মেধাবী উদ্যোক্তাদের অভিনব আইডিয়াগুলো বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই বিশ্বাস থেকেই তরুণ এই উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ট্রান্সফর্ম।


ইউনিলিভারের ইউএসএলপি (টেকসই জীবনমান পরিকল্পনা) এগিয়ে নিতেই যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রফেশনাল ফার্ম ‘আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং’ (ইওয়াই) যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ‘ট্রান্সফর্ম’ নামের এই উদ্যোগটি দারিদ্র নিরসনে বাজার কেন্দ্রিক সমাধানের জন্য অভিনব সামাজিক ব্যবসাকে সহযোগিতা করছে।    
২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন ল্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বকে আরো বেশি অর্ন্তভূক্তিমূলক, কার্বণ নিঃসরণ হ্রাস এবং বৈষম্যহীন অর্থনীতির দিকে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে ’ট্রান্সফর্ম’। পরিবেশ এবং সামাজিক উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিতেই ’টেকসই জীবনমান পরিকল্পনা প্রকল্প’ গ্রহণ করেছে ইউনিলিভার। ইউনিলিভারের তিনটি বড় লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে নয়টি প্রতিশ্রুতি পূরণের মাধ্যমে সামাজিক, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সহযোগি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি বড় ধরনের উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ইউনিলিভার। দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব সাহরান অঞ্চলে সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে ব্যবসার নতুন উদ্যোগকে সম্প্রসারিত করতে ৫০টিরও বেশি প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা (৪০ মিলিয়ন পাউন্ড) সহায়তা দিচ্ছে ইউনিলিভার। এর মধ্যে বাংলাদেশে ৮টি সংগঠনকে ২২ কোটি টাকা প্রদান করে সংগঠনগুলোর ভালো উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা করছে ‘ট্রান্সফর্ম’। বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্য-সুরা, স্যানিটেশনের মতো উদ্যোগের সঙ্গেও কাজ করছে ‘ট্রান্সফর্ম’।
বাংলাদেশে ’জীয়ন, মায়া, ভূমিজ, হ্যাপিট্যাপ, সবার জন্য পানি, সুইপ, ড্রিংকওয়েল ও ফোলিয়া ওয়াটার’- এই আটটি সংগঠন শর্ত অনুযায়ী অনুদান পেয়েছে।