ভারত সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এই সফরের আগে এক ভিডিও বার্তায় ভারতে ভয়াবহ হামলার হুমকি দিয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। একটি ভিডিওতে তারা এই হামলার হুমকি দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর চলতি সফরেই কাশ্মীর নিয়ে যাতে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন সে কারণে ভিডিওতে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ওই ভিডিওতে ভারত সরকারকে হুমকি দিয়ে মুখ ঢাকা একজনকে বলতে শোনা গেছে, মুসলমানদের হত্যাকারীদের ক্ষমা করা হবে না। যেভাবে তোমরা হিন্দুস্তানে মুসলিমদের হেনস্তা করেছ এবং তাদের ভাবনাকে ধ্বংস করেছ, তার বদলা নেওয়া হবে। শান্তির অনেক ঘুমপাড়ানি গান শুনেছি আমরা। এখন আর কোনও অজুহাত শোনার সময় নেই। এখন সময় এসেছে সংযমের রাশ আলগা করার। মুসলিমদের ক্ষমতা কতটা সেটা তোমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে ভারতীয় গোয়েন্দা ও কূটনীতিকদের ব্যাখ্যা হলো- ভিডিওটি ও তাতে বলা কথাতে উর্দুতে আফগানি টান রয়েছে।
পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিডিওটি পোস্ট করেছে জইশ। ট্রাম্পের ভারত সফরের ঠিক আগেই এটা করা হয়েছে যাতে কাশ্মীরে নিয়ে ট্রাম্প ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। ভিডিওতে হুমকি দেওয়া হয়েছে, যাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর চলতি সফরেই কাশ্মীর নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন।
ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর কাশ্মীরিরা শোষিত, নজরবন্দি, অত্যাচারিত। তাই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালাচ্ছে। জবাবে তাদের উপর পাল্টাঅত্যাচার করছে ভারতের সেনা ও পুলিশ। কাশ্মীর বিভাজনের উপযুক্ত জবাব ভারতকে দেওয়া হবে। ভারত সরকার কাশ্মীরিদের খুনি। তারা মুসলমানদেরও খুনি। তাদের ক্ষমা করা হবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী তথা মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি দুদিনের ভারত সফরে আসছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সিগুলি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চলতি মাসের গোড়ায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে একটি বৈঠক হয় পাকিস্তানি সেনা ও আইএসআই কর্মকর্তাদের। ম্যারাথন বৈঠক চলে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, হিজবুল মুজাহিদিনকে ফের সক্রিয় করা হবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পাকিস্তানি জঙ্গিদের (জইশ, লস্কর, হরকত উল মুজাহিদিন) পরিবর্তে কাশ্মীরি জঙ্গিদের (হিজবুল) আরও বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, লস্কর-ই তৈয়বা ও জয়েশ ই মোহাম্মদের পরিবর্তে এখন থেকে যাবতীয় জঙ্গি হামলার সব দায়িত্ব নেবে হিজবুল।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, কাশ্মীরিদের মন জয় করতে, তাঁদের আস্থা পেতে ভারতের পুলিশ, নিরাপত্তাবাহিনী থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ সকলের ওপর আত্মঘাতী হামলা হবে। নিরাপত্তাবাহিনীর কনভয় ও সেনা ঘাঁটিতে বড়সড় নাশকতা বা হামলা চালানোর চেষ্টা করা হবে। এমনটাই ঠিক হয়েছে পাকিস্তানি সেনা-জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বৈঠকে।