তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সিনেমা হল বাঁচলে চলচ্চিত্র শিল্প ও শিল্পীরা বাঁচবে। কারণ, প্রকৃতপক্ষে অনেকগুলো হল বন্ধ হয়ে গেছে। হল না থাকলে চলচ্চিত্র বাঁচবে না, আর চলচ্চিত্র না বাঁচলে শিল্পীরাও বাঁচবে না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি (বিএফপিডিএ), বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যম হচ্ছে হল। কিছু কিছু টেলিভিশনে রিলিজ করা হয়। কিন্তু মূল মাধ্যম হচ্ছে হল। প্রযোজক সমিতির সভাপতি যথার্থই বলেছেন, এখন হল বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে। আবার প্রযোজকদের অসুবিধা হলো, একটি ছবি যখন তারা নির্মাণ করে, তখন টাকা উঠে আসে না। অর্থাৎ সমস্যা এখানে বহুমুখী।
তিনি বলেন, হল মালিকদের দাবির সাথে পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির কোনো দ্বিমত নেই, সেটি হচ্ছে মুম্বাইয়ের সিনেমাসহ নির্দিষ্ট সংখ্যক সিনেমা বিদেশ থেকে আমদানি করা। আমি এ ব্যাপারে অনেকের সাথে কথা বলছি, কিন্তু শিল্পী সমিতি এখন পর্যন্ত সম্মতি দেয় নাই। আমরা সব পক্ষের সম্মতি ছাড়া সেটি করতে চাই না। অতীতে একবার করা হয়েছিল, সে নিয়ে আন্দোলন হয়েছে, অনেক বাক-বিতান্ডা হয়েছে। কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমি শিল্পী হিসেবে টিকে থাকবো যদি হল থাকে। যদি শিল্পটাই হারিয়ে যায়, তাহলে শিল্পী হিসেবে টিকে থাকার সুযোগটাও থাকবে না। এটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
জনগণ সিনেমা হলগুলোতে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়ার কারণে সারা দেশে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিনেমা হল রক্ষায় সকলকে একযোগে কাজ করা উচিৎ।
হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে বর্তমান সরকার এই শিল্পকে প্রাণবন্ত করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সিনেমা হল মালিকদের জন্য সহজ ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্য আমি ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পকে রক্ষা করা দরকার। আর চলচ্চিত্র শিল্পকে রক্ষার প্রধান উপাদান হলো সিনেমা হল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদানের পরিমাণ পাঁচ কোটি থেকে বাড়িয়ে দশ কোটি টাকা করেছে এবং অনুদানের জন্য এখন একটি নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী অনুদানের অর্থে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো সিনেমা হলে মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি চলচ্চিত্র নির্মাতার অনুদানের পরিমাণও বাড়িয়ে ৭৫ লাখ করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।
হাছান সিনেমা হল মালিকদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবেন। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন চলচ্চিত্র শিল্প তার অতীত ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করবে এবং বাংলা সিনেমা বিশ্বব্যাপী বাজার দখল করবে।
তথ্য সচিব কামরুন নাহারের পরিচালনায় বিএফপিডিএ সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশীদ ও প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন।