লিওনেল মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে নাপোলিকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। 

স্প্যানিশ দলটির হয়ে একটি করে গোল করেন লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেস ও ক্লেঁমো লংলে। নাপোলির হয়ে ব্যবধান কমান লরেন্সো ইনসিনিয়ে। চারটি গোলই হয় প্রথমার্ধে।

ম্যাচের শেষ দিকে মেসিকে স্রেফ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দলও সে সময়ে ছিল পুরোপুরি রক্ষণাত্মক। তবুও সুবিধাটা নিতে পারেনি নাপোলি। মেলাতে পারেনি আরো ২ গোলের সমীকরণ। প্রথমার্ধে তিন গোল করা বার্সেলোনা ধরে রাখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে অজেয় যাত্রা।

দ্বিতীয় মিনিটে সুযোগ এসে যায় নাপোলির সামনে। চোট শঙ্কা কাটিয়ে শুরু থেকে খেলা ইনসিনিয়ের ক্রস দুই জনের গায়ে লাগার পর ফাঁকায় পেয়ে যান ড্রিস মের্টেন্স। ঠিক মতো শট নিতে পারেননি তিনি, তবুও হতে পারতো গোল। কিন্তু পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় সফরকারীদের।

নাপোলির আক্রমণের ঝাপটা সামলে ধীরে ধীরে আক্রমণে যায় বার্সেলোনা। দশম মিনিটে এগিয়েও যায় স্বাগতিকরা। ইভান রাকিতিচের কর্নারে চমৎকার হেডে জাল খুঁজে নেন লংলে।  

দুর্দান্ত এক গোলে ২৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। সুয়ারেসের ক্রস পাওয়ার সময় তার সামনে ছিলেন নাপোলির দুই খেলোয়াড়, পরে যোগ দেন আরেকজন। ঘেরাও থেকে বল নিয়ে বের হতে গিয়ে পড়ে যান মেসি, তবুও নিয়ন্ত্রণ হারাননি। ততক্ষণে ছুটে আসেন প্রতিপক্ষের আরও কয়েক জন, তবুও কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি বার্সেলোনা অধিনায়কের।


চলতি আসরে এটি তার তৃতীয় গোল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় মেসির এটি ৩০ ম্যাচে ২৭তম গোল। সাত মিনিট পর আবারও বল জালে পাঠিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু রাকিতিচের ক্রস বুক দিয়ে রিসিভ করার সময় বল তার হাত স্পর্শ করায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল দেননি রেফারি।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সফল স্পট কিকে ব্যবধান বাড়ান সুয়ারেস। কালিদু কলিবালি মেসিকে ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি।

মের্টেন্সকে রাকিতিচ ফাউল করলে পেনাল্টি পায় নাপোলি। সফল স্পট কিকে ব্যবধান কমান ইনসিনিয়ে। প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে ব্যবধান আরো কমানোর সুযোগ এসেছিল ইতালিয়ান দলটির সামনে। কোনোমতে রক্ষা পায় বার্সেলোনা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে স্বাগতিকদের চেপে ধরে নাপোলি। ৫২ মিনিটে সুযোগও এসে যায়। তবে খুব কাছ থেকে গোলরক্ষক বরাবর হেড করে দলকে হতাশ করেন ইনসিনিয়ে।

প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে খেই হারাচ্ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরই মধ্যে ৭০ মিনিটে বদলি নামার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দারুণ একটি সুযোগ পেয়ে যান নাপোলির ইয়েরভিং লোসানো। কিন্তু হেড লক্ষ্য রাখতে পারেননি তরুণ এই ফরোয়ার্ড।

আর্কিদিউস মিলিক ৮১তম মিনিটে চমৎকার হেডে জাল খুঁজে নেন। কিন্তু তিনি অফসাইডে থাকায় গোল দেননি রেফারি। বাকি সময়ে বার্সেলোনাকে প্রবল চাপে রাখে সফরকারীরা। কিন্তু জালের দেখা আর মেলেনি।

প্রত্যাশা ছিল দ্বিতীয়ার্ধে আরও গোলের দেখা মিলবে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি বাড়িয়ে দিয়েও আর গোলের দেখা পায়নি বার্সেলোনা। অন্যদিকে নাপোলি গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলেও বার্সেলোনার রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি। আর তাই তো প্রথমার্ধের স্কোর লাইন অর্থাৎ ৩-১ গোলের ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়ে বার্সেলোনাকে।

কোয়ার্টারে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ। আগামী শনিবার (১৫ আগস্ট) তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে লড়বে দুই দল।