চুনারুঘাট প্রতিনিধি

কোন কাজ না করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষোভ প্রকাশ।।
সরকারি অনুদানের অর্থ প্রকল্প খাতে ব্যায় না করার সুযোগ নেই-ইউওনো।

স্বপন আহাম্মেদ চুনারুঘাটঃ -হবিগঞ্জের
বানিয়াচংয়ে মন্দির উন্নয়নের সরকারি বরাদ্দের টাকা ৬মাস ধরে দেবীচাদ দাস নামের এক ইউপি সদস্যর পকেটে রেখে নিজে মেরে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউপি সদস্যর এমন ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে,মন্দিরে কোন কাজ কাম না করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীগন ক্ষোভ প্রকাশ করে এই মেম্বারের বিচার দাবি জানিয়েছেন।


এক অনুসন্ধানে জানাযায়,হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ১৫নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নের ৯নং
ওয়ার্ডের সদস্য দেবীচাঁদ দাসের বিরুদ্ধে মন্দিরের উন্নয়নের বরাদ্দকৃত সরকারি অনুদানের টাকা কোন কাজকর্ম না করিয়ে তার পকেটে রেখে মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
এবিষয়ে স্হানীয় এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায়,প্রায় ৬ মাস পূর্বে ইউপি সদস্য দেবীচাঁদ দাস বানিয়াচং উপজেলা পরিষদ হতে পৈলারকান্দি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত বসন্তপুর বড়পাড়া গ্রামের মোড়লবাড়ী মন্দির উন্নয়নের কাজের জন্য ৫০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান আনেন।
কিন্তু দীর্ঘ ৬মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত মন্দিরের উন্নয়নমূলক কাজ করাননি।


তিনি কোন কাজ না করেই এই টাকা গুলো নিজের পকেটে রেখে মেরে দেওয়ার পায়তারা করে যাচ্ছেন।
তার এহেন ঘটনাটি গত দূর্গাপূজা পরিদর্শন উপলক্ষে বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরীর কাছ থেকে জানতে পান এলাকাবাসী।


চেয়ারম্যান এই মন্দিরে পূজা পরিদর্শনে গিয়ে মন্দিরের এমন অবস্থা দেখে তিনি বলেন,এই মন্দিরে ৬মমাস পূর্বে ৫০হাজার টাকা দিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি দেখে ও জানতে পেরে তিনি নিজেও হতবাক হয়ে পড়েন।


চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরীর কাছ থেকে এসব শুনার পর স্হানীয় ধর্মপ্রান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে এই মেম্বারের বিচার দাবি করেন।
তখন এই বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী দেখবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।


এদিকে পৈলারকান্দি ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমেশ দাস চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমাদের মোড়লবাড়ীর এই মন্দির উন্নয়নের জন্য সরকারি ভাবে আমাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা উপজেলা থেকে।


এবং টাকা গুলো প্রদান করা হয় আমাদের ইউপি সদস্য দেবীচাঁদ দাসের নিকট।


কিন্তু টাকা পাওয়ার দীর্ঘকাল অতিবাহিত হলেও সরকারি অনুদানের একটি টাকাও মন্দিরের কাজে ব্যবহার করেননি এই ইউপি সদস্য(মেম্বার) দেবীচাদ দাস।


তিনি গোপনে টাকা গুলো নিজের কাছে রেখে আত্মসাত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে মেম্বারকে বার বার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি বিভিন্ন অজুহাতে অনুদানের অর্থ মন্দিরের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে বিষয়টি এড়িয়ে যান বলেও অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে বসন্তপুর ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি স্হানীয় বাসিন্দা মনীন্দ্র চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও দুঃখজনক।
আমরা চাই সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা গুলো যেন মন্দিরের কাজে ব্যবহার করা হয়।


অন্যদিকে বসন্তপুর বড়পাড়ায় সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়,নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে মোড়লবাড়ী মন্দিরটি বর্তমানে মলিন অবস্থায় রয়েছে।
কোন রকম ভাবে নামে মাত্রই মন্দিরটি ঠিকে আছে।
কোন প্রকার উন্নয়নমূলক কাজের আচর বা ছোঁয়া লাগেনি আজও।


এসব বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য(মেম্বার) দেবীচাঁদ দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনি মোড়লবাড়ী মন্দির উন্নয়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
বন্যা ও বিভিন্ন কারণে মন্দিরের উন্নয়নের কাজ করা সম্ভব হয়নি তার।


তবে অনুদানের টাকা গুলো গচ্ছিত রয়েছে তার কাছে।
কতৃপক্ষ চাইলে তিনি যেকোন মুহুর্তে অনুদানের টাকা গুলো ফেরত দিয়ে দিতে পারবেন।
এভাবে কতৃপক্ষকে অবগত না করে মন্দির উন্নয়নের জন্য সরকারি প্রাপ্ত অনুদানের টাকা নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প খাতে ব্যবহার না করে নিজের কাছে মজুদ রাখা কতটুকু যৌক্তিক ও আইনসঙ্গত এমন প্রশ্ন করে জানতে চাইলে,অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দেবীচাদ মেম্বার এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মা সিংহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বিষয়টি আমিও শুনেছি এবং গুরুত্ব সহকারে দেখছি।


কিন্তু মন্দির উন্নয়নের জন্য সরকারি অনুদানের অর্থ প্রকল্প খাতে ব্যায় না করার কোন সুযোগ নেই।
তাই এই বিষয়টি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করার কথা বলেন তিনি।