পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোন প্রাণীর পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। দৈনন্দিন জীবনে যেমন পানি একটু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তেমনি ভ্রমণেও এর প্রয়োজনীয়তার কমতি নেই। এই সময়ে বহু ভ্রমণ পিপাসু পাহাড়, ঝর্ণা, খাড়ি, ঝিরিতে ভ্রমণ করে এবং অনেকেই দলে গিয়ে ক্যাম্পিং ও করে থাকে। তাদের অনেকেই সাথে করে বহনের কষ্টের দরুন পানি নিতে চান না। সরাসরি ঝর্ণা বা ছড়ার পানি খেতে চান। যেটি অত্যন্ত মারাত্মক এবং অনেক ক্ষেত্রে নিজের জন্য ভয়ংকর ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তাই তাদের জন্যই আজ থাকছে পানি বিশুদ্ধ করনের কিছু সহজ টিপস।
১. ফুটিয়ে:
পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরনো ও কার্যকর পদ্ধতির একটি হল পানি ফুটিয়ে নেয়া। পানি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটানো হলে এরমধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করা যায়। তাই ভ্রমণে সরাসরি পানি না পান করে ফুটিয়ে নিন।
২. ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লিচিং:
পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক পদার্থ । যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানি বিশুদ্ধিকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি পরিশোধন করা যেতে পারে। ভ্রমণে পানি বিশুদ্ধ করনের এটি একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। সাধারণত প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট বা ১০ লিটার পানিতে ব্লিচিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। এভাবে পরিশোধিত পানিতে কিছুটা গন্ধ থাকলেও সেটা পরিষ্কার স্থানে খোলা রাখলে বা পরিচ্ছন্ন কোন কাঠি দিয়ে নাড়াচাড়া করলে গন্ধটি বাতাসে মিশে যায়।
৩. পটাশ বা ফিটকিরি:
এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এক্ষেত্রে পাত্রের উপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে। অথবা পানি ছেকে নিয়ে পান করতে হয়।
৪. সৌর পদ্ধতি:
যেসব প্রত্যন্ত স্থানে পরিশোধিত পানির অন্য কোনও উপায় নেই সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সৌর পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে দুষিত পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে কয়েকঘণ্টা তীব্র সূর্যের আলো ও তাপে রেখে দিতে হবে।এতে করে পানির সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়।
৫. আয়োডিন:
এক লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিনের দ্রবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। তবে এই কাজটি শুধুমাত্র দক্ষ কারও মাধ্যমে করা উচিত। কেননা পানি ও আয়োডিনের মাত্রা ঠিক না থাকলে সেই পানি শরীরের ক্ষতি করতে পারে।