প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইউরোপে। করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্স। পুরো ইউরোপ করোনা আতঙ্কে গৃহবন্দী।
অথচ ইউরোপের একেবারেই ব্যতিক্রম দেশ হচ্ছে সুইডেন। দেশটিতে কোথাও কোনো লকডাউন নেই। জীবনযাত্রা চলছে স্বাভাবিকভাবেই। করোনার থাবায় বিশ্ব আতঙ্কগ্রস্ত হলেও সুইডিশরা এখনও আগের মতোই অফিসে যাচ্ছেন। বাজারে যাচ্ছেন মাল-সামান কিনতে। দলবেঁধে মজা করে খাচ্ছেন রেস্তোরাঁয়। দীর্ঘ শীতের পর আবহাওয়া কিছুটা উষ্ণ হতে শুরু করেছে।
ঘরের বাইরে বসে সময় কাটানোর মতো উষ্ণতা এসেছে চারপাশে। করোনার আতঙ্ক ভুলে খোশ মেজাজে মিঠে রোদ গাঁয়ে মাখছে সুইডেনের জনগণ।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে রাজধানী স্টকহোমের মারিয়াটরগেট স্কয়ারে আইসক্রিম খেতে জড়ো হচ্ছেন অনেকে। শহরের অন্যান্য অংশে খোলা রয়েছে নাইটক্লাবগুলো।
সুইডেনে লকডাউনে না থাকলেও করোনার আতঙ্ক স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছে। দেশটির রাস্তাগুলো আগের চেয়ে নীরব হয়ে উঠেছে। স্টকহোমের গণপরিবহন প্রতিষ্ঠান এসএল জানিয়েছে, সাবওয়ে ও কমিউটার ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা অর্ধেকের মতো কমে গেছে।
রাজনীতিক ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এখনও প্রত্যাশা করছেন, কঠোর পদক্ষেপ আরোপ না করেও তারা ভাইরাসটির সংক্রমণ রুখতে পারবেন। কঠোর বিধিনিষেধের জায়গায় সরকার নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে। যেমন, বয়স্ক বা অসুস্থ হলে ঘরে থাকা, নিজের হাত ধোয়া, অপ্রয়োজনীয় কারণে বাইরে না যাওয়া, ঘরে থেকে কাজ করা।
গত সপ্তাহে সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লভিন বলেন, আমরা যারা বয়স্ক তাদের বয়স্কদের মতোই কাজ করতে হবে। আতঙ্ক বা গুজব ছড়াবেন না। এই সংকট কারো একার নয়। প্রত্যেক মানুষেরই বড় দায়িত্ব রয়েছে। সুইডেনে জনগণের মধ্যে কর্তৃপক্ষের প্রতি উচ্চ পর্যায়ের আস্থা রয়েছে। অনেকের বিশ্বাস, এজন্য মানুষ সরকারের নির্দেশনা নিজ থেকেই মেনে চলছে।
এখন পর্যন্ত সুইডেনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২৮ জন। মারা গেছেন ১৪৬ জন।