ভারতের পুনে আইসিএমআর-এনআইভির বিজ্ঞানীদের অণুবীক্ষণ যন্ত্রে (ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ) এই প্রথম ধরা পড়লো করোনাভাইরাসের ছবি। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কীভাবে ওই ভাইরাসের হদিস পাওয়া গেলো, সেই তথ্যসহ করোনা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘SARS-CoV-2 এর ট্রান্সমিশন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি ইমেজিং’ নামে প্রকাশিত ওই নিবন্ধটি লিখেছেন আইসিএমআর-এনআইভি জাতীয় ইনফ্লুয়েঞ্জা কেন্দ্রের বিশেষ দলের বৈজ্ঞানিকরা। লেখকদের মধ্যে রয়েছেন এনআইভির পুনের উপ-নির্দেশক এবং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি এবং প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অতনু বসু।
গত ৩০ জানুয়ারি ভারতের প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্তের গলা থেকে সংগৃহীত নমুনা গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করার সময় ওই ছবিটি তোলা হয়। যে করোনা আক্রান্তের গলা থেকে সংগ্রহ করা লালায় ওই ভাইরাস মেলে তিনি এর আগে চীনের উহানে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করছিলেন। ওই দেশ থেকে ভারতে ফিরে আসার পরেই তার শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ধরা পড়ে।
উহানফেরত ওই শিক্ষার্থী কেরালার বাসিন্দা। বছর দুয়েক আগে মেডিসিন বিভাগে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য চীনে গিয়েছিলেন তিনি। তারই শরীর থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় মেলে করোনা ভাইরাসের ছবি। পুনের বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ভাইরাসের সঙ্গে আকারগত সাদৃশ্য রয়েছে ২০১২ সালে চীনে ব্যাপক সংক্রমণ ঘটানো Mers-Cov ভাইরাস বা মিডল ইস্ট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম করোনাভাইরাসের। পাশাপাশি এই ভাইরাসের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে ২০০২ সালে ছড়িয়ে পড়া Sars-CoV বা SARS (সিভিয়র অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম) নিউমোনিয়া ভাইরাসেরও।
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (NIV)-তে করা কেরলের ছাত্রীর শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলোর জিন সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা গেছে, উহানের ভাইরাসের সঙ্গে এই ভাইরাসটি ৯৯.৯৮ শতাংশ মিল রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছে, COVID-19 আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। গোটা দেশে এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন এবং শুক্রবার পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী ভারতজুড়ে করোনা আক্রান্ত ৭০০-রও বেশি মানুষ। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন পর্ব চলছে। আপাতত আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশবাসীকে ঘরের চৌকাঠ পেরোতে বারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।