মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামের আবদুল ওহাব দেওয়ান (৬২) ঢাকার ওয়ারির বাসিন্দা। গত শুক্রবার গ্রামের বাড়ি এসে করোনাভাইরাসের কারণে ১০/১৫ জন দুস্থের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। তখন ছিলেন একদম সুস্থ। ঢাকায় ফিরে গিয়ে হঠাৎ জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও তিনি একে খুব একটা পাত্তা দেননি, যাননি হাসপাতালে। কিন্তু গতকাল সোমবার সকাল ৭টার দিকে মারা যান ওহাব দেওয়ান।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সন্দেহের খবর পেয়ে ঢাকার বাসায় ওয়ারী থানার পুলিশ আসে। পুলিশ আত্মীয়-স্বজনকে বাসায় ঢুকতে দেননি বলে জানান মৃতের ভাই আবদুল মান্নান দেওয়ান। ওহাব করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা, সেজন্য মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান আইইডিসিআর। পরে রাত ৯টার দিকে জানানো হয়, ওহাব দেওয়ান করোনাভাইরাসে মারা গেছেন।
ওয়ারী থানার পুলিশ ওহাবের মরদেহ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গেছেন এবং তাদের তত্ত্বাবধানে দাফন করা হবে বলে ওহাবের বড়ভাই আবদুল মান্নান জানিয়েছেন।
এদিকে করোনায় ওহাবের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিন দিন আগে ওহাবের কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাওয়া দুস্থরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা-এমন প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে।
কনিহত ওহাবের ওয়ারী বাসার প্রতিবেশী র্যাঙ্কিন স্ট্রীটের বাসিন্দা ও তার গ্রামের বাড়ী কনকসারের পাশ্ববর্তী হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল হক জানান, ওহাবের মৃত্যুর কারণে আমাদের এ এলাকা প্রশাসন হতে লক ডাউন করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে লৌহজংয়ের কনকসার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত ওহাব কনকসার গ্রামের মঙ্গল দেওয়ানের ছেলে। গত শুক্রবার সে কনকসার এসে এলাকাবসীর মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ বিতরণ করে গেছেন। যদি সে করোনায় মারা গিয়ে থাকে তবে তার বাড়ীর আশেপাশে বা ত্রাণ গ্রহীতারাও ঝুকির মধ্যে রয়েছে। এ কারনে এলাকা লক ডাউন করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাবিরুল ইসলাম খান জানান, সে গত শুক্রবার কনকসারের গ্রামের বাড়িতে এসে দুস্থ্যদের মাঝে ত্রাণ দিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে সে করোনায় মারা গেছে কিনা তা নিশ্চিত নই। গতরাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমরা আইইডিসিআর থেকে জানতে পারিনি। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকাদরের মাধ্যমে ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। যদি আইইডিসিআর তার মৃত্যু করোনা বলে জানায়, তবে আইইডিসিআরের নির্দেশনা মতে এলাকাটি লক ডাউন করা দেয়া হবে। তবে প্রথমিকভাবে আমরা এলাকাটির ১০টি পরিবারকে আদালা করে রেখেছি। মঙ্গলবার আইইডিসিআর থেকে নির্দেশনা পেলে এলাকাটি লক ডাউন করে দেয়া হবে।